বাঁশের বেড়ার সীমানায় গৃহবন্দী পরিবার

ঝালকাঠি প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২২, ১১:৫৫ এএম বাঁশের বেড়ার সীমানায় গৃহবন্দী পরিবার

কাঠালিয়া প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর চাওয়ার অভিযোগে তিনটি পরিবারকে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বসতবাড়ির প্রবেশপথে বাঁশের বেড়া ও টিন দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে পরিবারগুলোকে। এভাবে কয়েক মাস যাবত গৃহবন্দী হয়ে জীবনযাপন করলেও এগিয়ে আসেননি কোনো জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কেউ। বাধ্য হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারগুলো। 

ঘটনাটি ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিন আউরা গ্রামের। ভুক্তভোগী সফিকুল ইসলাম শাওন এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুফল পায়নি। শফিকুল কাঠালিয়া প্রেস ক্লাবের অফিস সহকারী। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক সংকট ও জমি না থাকায় সরকারি ভুমিহীন ঘরের জন্য ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর বরাবর আবেদন করে সফিকুল ইসলাম শাওন। আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওসমান গনি কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ফরওয়ার্ডিং করে। এরপরপরই বিষয়টি নিয়ে ক্ষিপ্ত হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলামের স্বজনদের গৃহবন্দীসহ শফিকুলকে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে এলাকাছারা করছেন ইউএও সুফল চন্দ্র গোলদারের এমনটা উল্লেখ রয়েছে অভিযোগ ।

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঘরের জন্য আবেদন করি। তাই ইউএনও আমাকে হয়রানী করছে। আমার আত্বীয় স্বজনদের গৃহবন্দী করছে আমাকে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে এলাকাছারা করছে। এ বিষয়ে আমি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় লিখিত আবেদনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান পাইনি।’

এদিকে এই প্রকল্প ঘিরে বাণিজ্যের অভিযোগও পাওয়া গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে। স্থানীয় দালালরা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অসাধুদের মাধ্যমে অর্থ নেয়া হয়েছে উপকারভোগীদের কাছ থেকে। কোথাও কোথাও নেয়া হয়েছে নির্মাণ সামগ্রীর দাম। আবার কোথাও মালামালের ভাড়ার কথা বলে নেয়া হয়েছে অর্থ। যারা ঘর উপহার পেয়েছে তাদের অনেকেরই জমি ও বসত ঘর। 

ভুমিহীন ঘরে দুর্নীতির বিষয়ে কাঠালিয়া সামাজিক আন্দোলন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: ইসরাফিল তালুকদার শুভ তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে এ পোস্ট করে বলেন, জানতে চাই, পৈতৃক নিবাস আছে। সেখানে ভাড়াটিয়া, নিজেরা খালের চরে সরকারি জমি দখল করে তুলে থাকছে। অন্য জায়গায় জমি কিনেছে, আবার সরকারি জমিও পেয়েছে প্রায় দশ কাঠা। এখন আবার আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘরও পেয়েছে কি অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? এটাই বাস্তব কিভাবে সম্ভব? কে দেবে এর জবাব, উপজেলা বাসিকে জানিয়ে রাখলাম।

কাঠালিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো: বাদল হাওলাদার বলেন, আমাদের প্রেস ক্লাবের অফিস সহকারী শফিকুল ইসলাম শাওন ভূমিহীন ঘর না পাওয়া এবং তিনটি পরিবার গৃহবন্দী করায় এটা কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা এটা ঠিক করেননি। আমরা প্রধানমন্ত্রী কাছে এর সঠিক বিচার চাই। 

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম রাসেল সিকদার বলছেন, কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার সে দুর্নীতিবাজ, বিভিন্ন দপ্তর ও যায়গা থেকে মাসিক চাঁদা তোলে না হলে মিথ্যা মামলার হুমকি পর্যন্ত দেয় প্রধানমন্ত্রী কাছে এর সঠিক বিচার চাই। 

প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব তালুকদার জানান, কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা সুফল চন্দ গোলদার আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটায়, বাল্য বিবাহর নিউজ করাতে, নির্বাহী কমকর্তার ভিষণ হলো কাঠালিয়া উপজেলা থেকে বিশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে ফোনটি কেটে দেয়। 
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জোহর আলী জানান, শফিকুল ইসলাম শাওনের একটি ই-মেইল আসছে আমাদের কাছে মুখ্য সচিবের একান্ত সচিবের কাছ থেকে। শাওন ভুমিহীন ঘর পাবে, তবে ঘরের জন্য কোনো টাকা নেয়া হয়েছে কিনা তা জানা নেই। এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জাগরণ/আরকে