কুবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২২, ০২:২৭ পিএম কুবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

মেসেঞ্জার গ্রুপে বান্ধবীর সাথে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। 

সোমবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিক থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ব বিভাগের ১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার গ্রুপে কাউসার হোসেন আপনের সঙ্গে এক বান্ধবীর কথা কাটাকাটি হয়। ওই বান্ধবীর স্বামী রিয়াজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। কথা কাটাকাটির বিষয়টি ঐ বান্ধবী রিয়াজকে জানালে রিয়াজ তার হলের বন্ধুদের জানায়।

পরে সোমবার ইফতার শেষে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে বিষয়টি নিয়ে আপনের কাছে জানতে চান ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আলভির ভূঁইয়া। কথা বলার এক পর্যায়ে তারা আপনকে ‘ক্যাম্পাসে পাকনামি কম করিস’ বলে কয়েকটি থাপ্পড় দেয়। আপন বিষয়টি তার বিভাগের সিনিয়র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সেলিম আহমেদ, আরিফ ও তার বন্ধু গালিবকে জানালে তারা রবিনের কাছে বিষয়টি জানতে প্রধান ফটকের সামনে যান।

এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের রবিন, আলভির, শরীফ, শাহিন, সবুজ, জামিল, ইয়াসিনসহ কয়েকজনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সেলিম, আরিফ, গালিব ও মুজাহিদ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও শাখা ছাত্রলীগের নেতারা উপস্থিত হয়ে সবাইকে হলে চলে যেতে বলেন। পরে ক্যাম্পাস গেইটে মীমাংসার জন্য ডাকলে সেখানে দুই গ্রুপের মধ্যে আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় দুই হলের সিনিয়র নেতাদের উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়। পরে দুই গ্রুপকে হলে ফিরে যেতে বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর ও মুক্তমঞ্চে ফের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে উভয় গ্রুপ। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে হলে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে কাউসার হোসেন আপন বলেন, ইফতারের পর রবিন ও আলভি আমাকে এসে থাপ্পড় মারতে থাকে। আমি বিষয়টি আমার সিনিয়র ও বন্ধুদের জানালে তারা ওদের সাথে কথা বলতে যায়। এসময় তারা আবারও আমাদের মারধর করেন।

আলভির ভূঁইয়া বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আপনের সাথে ধাক্কা লাগলে তাকে কোন ব্যাচ জিজ্ঞেস করলে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় সে আমার শার্টের কলার ধরলে আমরা দুজন তাকে থাপ্পড় দেই। পরে বঙ্গবন্ধু হলের সেলিমসহ কয়েকজনের সাথে হাতাহাতি হয়।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছিল। সেটা মীমাংসা করতে গেলে একটা গুজব উঠে কিছু হট্টগোল হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বসেছি। এর পিছনে যাদের সংশ্লিষ্টতা থাকবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।

এবিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরাসহ প্রক্টরিয়াল টিম প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম। শিক্ষার্থীদের হলে পাঠিয়ে দিয়েছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মোকাদ্দেস উল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা দেখেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।

প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা প্রক্টরিয়াল টিম ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। এখন যেহেতু উভয় পক্ষ উত্তেজিত, তাই আজকে আর বসব না। আমরা প্রক্টরিয়াল টিম আগামীকাল উভয় পক্ষের সাথে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

জাগরণ/আরকে