শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলাতে আবারও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মীদের।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ তৎপরতা শুরু করেছে বলে দলীয় সুত্রে জানা গেছে। বিগত ২০১৪ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের একটি স্বার্থান্বেষী মহল উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের সাবেক সফল সভাপতি এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে হত্যা চেষ্টা করে উপজেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার ষড়যন্ত্র করে।
তবে অল্পের জন্য বেচে যান নাইম। গুরুতরভাবে আহত হন তিনিসহ প্রায় ডজন খানেক নেতাকর্মী। এসময় পেট্রোল বোমা হামলায় কার্যালয়ে রক্ষিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে ওই সময় ঝিনাইগাতী থানায় একটি মোকদ্দমা দায়ের করা হয়। দলীয় সুত্রে জানা গেছে,এবারের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবারও উপজেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। তবে এবার আর তাকে হত্যা করে নয়। নানা ধরনের অপবাদ দিয়ে তাকে দল থেকে সরানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে ওই স্বার্থান্বেষী একটি মহলের। যারা বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন তারাই এসব ষড়যন্ত্র করে আসছেন বলে জানা গেছে। গত ৯ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দসহ শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিউর রহমান আতিক এমপি ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ বীরমুক্তযোদ্বা আতিউর রহমান আতিক এমপি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। কিন্ত নতুন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা না করেই সভার কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে সভাপতি, সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গত ২০ দিন অতিবাহিত হলেও সভাপতি/সম্পাদকের নাম ঘোষণা না করায়। ওই স্বার্থান্বেষী মহল উপজেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে দলের সদ্য বিলুপ্ত সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম যাতে দলের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে না পারেন এ উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে তাকে নিয়ে নানা বিষোদাগার করার পাশাপাশি নামে বেনামে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগপত্র পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট এমন অভিযোগ করেন
এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম।
দলের গুরুত্বপূর্ণ সুত্র জানায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের হাল ধরতে এবং দলের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের কান্ডারী এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমের কোনো বিকল্প নেই।।তৎকালিন সময়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ঝিনাইগাতী সফরে আসলে। তার হাত ধরেই দলে যোগদান করেন এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম।
দলে যোগদানের কিছুদিন পর দলীয় কাউন্সিলে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (ঝিনাইগাতী- শ্রীবরদী) আসন থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। এ বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না বর্তমান সংসদ সদস্য ও তার অনুসারীরা। এ কারনেই তাকে সরিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে চায় ওই মহলটি।
দলীয় সুত্রে আরো জানা গেছে। গত ২২ বছর ধরে নাইমের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দলীয় কার্যালয়ের ভাড়াসহ দলের সকল কর্মকান্ডের ব্যয়ভার মেটাতে হচ্ছে তার । দেশ স্বাধীনতার পর ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে বড় কোন রাজনৈতিক দল এমপি প্রার্থী মনোনয়ন পায়নি কোনো দিন। ফলে যতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে শ্রীবরদী উপজেলা থেকে। নাইম ছাড়া ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে আর কোন যোগ্য প্রার্থী নেই। এ কারণে শ্রীবরদী উপজেলার এমপি প্রার্থীরা চান না একজন এমপি প্রার্থী মাথা উঁচু করে দাঁড়াক ঝিনাইগাতী উপজেলায়। এ অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃনমুল নেতাকর্মীদের। এবারের কাউন্সিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নাইম ও বিশ্বজিৎ রায়কে প্যানেল করে একটি কমিটি জমা দেওয়া হয়।
এদিকে সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক চাঁনের অনুসারীদের পক্ষ থেকে প্যানেল দেয়া হয়েছে গোলাম মোস্তফা ও বেলায়েত হোসেনকে দিয়ে। সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক চাঁন তার অনুসারীরা দলের দায়িত্বে থাকবেন এমন প্রত্যাশা তার। উপজেলা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে ২০০১সালে শিল্পপতি এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে দলে আনেন তারাই। এবিষয়ে শ্রীরবদী,ঝিনাইগাতী আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য একে এম ফজলুল হক চাঁন তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করলেও সম্প্রতি তার অনুসারি গোলাম মোস্তফা ও বেলায়েত হোসেন সহ তারা শেরপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমের বিরুদ্ধে বিষোদাগার করে বক্তব্য রাখেন। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম তিনিও সংবাদ সম্মেলন করে বলেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে দলের সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছি ভবিষ্যৎতেও তার নিদর্শনা মেনে কাজ করে যাবো ।