নরসিংদী কারাগার

৪৮১ কয়েদির আত্মসমর্পণ ও লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৪, ১২:৫৬ এএম ৪৮১ কয়েদির আত্মসমর্পণ ও লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার
ছবি ● সংগৃহীত

নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ৮২৬ আসামিসহ ছিনিয়ে নেয়া ৯ জঙ্গির মধ্যে জুয়েল ভূঁইয়া (২৬) নামের আরও এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

একইসঙ্গে কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫টি অস্ত্র, হাতকড়া ও এক হাজার ৯১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেছেন ৪৮১ জন কয়েদি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বরুয়া এলাকা থেকে হিজবুত তাহরীর সংগঠনের নেতা জুয়েল ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

তার আগে কারাগার থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ৯ জঙ্গির মধ্যে দুই নারী গ্রেফতার হন। এ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হলো। 

৪৮১ কয়েদির আত্মসমর্পণ/নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার, এক জঙ্গি গ্রেফতার

গ্রেফতার জঙ্গি জুয়েল ভূঁইয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কাজিরচর গ্রামের আবুল ভূঁইয়ার ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, স্বাধীনতাবিরোধীরা কারাগারে অগ্নিসংযোগ করেই ক্ষ্যান্ত হননি। তারা ডিসি অফিস, এসপি অফিস, আদালত পাড়াসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করেন। তারা কারাগার থেকে লুট করা অস্ত্র ও গুলি দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। নরসিংদী জেলা পুলিশের সদস্যরা জীবনবাজি রেখে তাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করে সরকারি সম্পদ ও জানমাল রক্ষা করেন।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের হামলায় পুলিশের চার সদস্য গুরুতরসহ ৩৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক পুলিশের মাথায় ৭৫টি সেলাই লেগেছে। একজনের অবস্থা এখনো গুরুতর।

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলার পরপরই লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে চিরুনি অভিযানে নামে পুলিশ। মাত্র পাঁচ দিনের ব্যাবধানে লুট হওয়া ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে ৪৫টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

৪৮১ কয়েদির আত্মসমর্পণ/নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার, এক জঙ্গি গ্রেফতার

উদ্ধার ৪৫টি অস্ত্রের মধ্যে ২০টি চায়না রাইফেল, ১৫টি রাইফেল ও ১০টি শটগান রয়েছে। এছাড়া এক হাজার ৯১টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি কারাগারে হামলার ঘটনায় পৃথক ১১টি মামলায় ১৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাছাড়া এখন পর্যন্ত আইনজীবী সমিতি এবং জেলা পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে যাওয়া ৪৮১ জন কয়েদি আত্মসমর্পণ করেছেন।

গত ১৯ জুলাই বিকেলে নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালান হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। ওইসময় তারা কারাগারের প্রধান ফটক ভেঙে জেল সুপার ও জেলারের অফিস কক্ষ, পুলিশ ব্যারাকসহ পুরো কারাগারে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে তারা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র, গুলি ও খাবার লুট করে নেন। ওইসময় জেলে থাকা আনসারুল্লাহ বাংলা ভাই জঙ্গি সংগঠনের ৯ সদস্যসহ ৮২৬ জন আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসযজ্ঞ চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। ওইসময় কারাগারের ভেতরের বিভিন্ন প্রান্তে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ চালানো হয়। এতে কারাগারের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ওইদিন কারাগার থেকে লুট হয় ৮৫টি অস্ত্র ও সাড়ে ৮ হাজার গুলি। এরমধ্যে ৪৫টি অস্ত্র ও এক হাজার ৯১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে লুট হওয়া অস্ত্রের সন্ধানদাতাকে ৫০ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

জাগরণ/স্বদেশ/এসএসকে