চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ মে পর্যন্ত সারা দেশে ২৩৩ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও। এনজিওর কর্মকর্তারা জানায়, এ সময়ে একটি ছেলে শিশুসহ ৩২ জন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে সংগঠনের কর্মকর্তারা।
তারা জানান, দুটি ছেলে শিশুসহ ৩৫ জন শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে গত ৫ মাসে। নিহত শিশুদের মধ্যে ৭ জন শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং একজন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়াও দুটি শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর আত্মহত্যা করেছে।
২০১৮ সালে সারা দেশে মোট ৩৫৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয় এবং মারা যায় ২২ জন শিশু। ৫৩ জন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। সম্মেলনে বক্তারা বলেন, শিশুদের প্রতি ধর্ষণের ঘটনার দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার অপরাধের ধরণ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটছে এবং ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শুধু মেয়ে শিশু নয়, ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে ঘটছে যৌন হয়রানি ও হত্যার মতো ঘটনা। শিশুরা কোনো জায়গাতে নিরাপদ নয়। সে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে তার নিজের বাড়িতে, প্রতিবেশীর বাড়িতে, স্কুলে যাওয়ার পথে এবং স্কুলে। এমনকি প্রতিবন্ধী শিশু বাচ্চাও ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহ সরকার এবং তার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে শিশু ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে— যত দ্রুত সম্ভব অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার সম্পন্ন করা, শিশুর প্রতি ধর্ষণ ও সহিংসতা বন্ধে প্রণীত আইনসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এই মুহূর্তেই বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিভিন্ন পর্ন্য সাইট ও বিদেশি চ্যানেল যেখানে সহিংসতার ঘটনা দেখায় তা বন্ধ করা, তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সচেতনমূলক ডকুমেন্টারি গ্রাম পর্যায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা, বিআরটিএ এর মাধ্যমে গাড়ি চালকদের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধমূলক বার্তা প্রদানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা উল্লেখযোগ্য দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শিফা হাফিজ, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক সেলিনা হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ।
এইচ এম/টিএফ