২০১৭ সাল শেষে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের অনেক অ্যাকাউন্টে সোয়া ১৫ লাখ টাকার বেশি জমা পড়ে ছিল। এই বিপুল টাকার মালিক খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বছর ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে টাকার অঙ্কটাও বেশ বড় হতে থাকে। সবশেষ ২০২১ সালের ১২ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ বছরে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের অনেক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১০৮ কোটি ১৮ লাখ ২২ হাজার ৫০৩ টাকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
টাকা পড়ে থাকা অ্যাকাউন্টগুলোতে ১০ টাকা থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত জমা রয়েছে। তবে এতো বেশি টাকা জমা হলেও এর মালিক খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃত মালিক না থাকায় অদাবিকৃত এসব অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত)’-এর ৩৫ ধারা অনুযায়ী, ১০ বছর ধরে কোনো ব্যাংক হিসাবে লেনদেন না হলে এবং ওই আমানতের গ্রাহককে খুঁজে পাওয়া না গেলে, ব্যাংকগুলোকে সেসব অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা করতে হয়।
তথ্য বলছে, এসব হিসাবধারীর মধ্যে একজন শোয়েবুর রহমান। ইসলামী ব্যাংকের বিয়ানীবাজার শাখায় তার নামে সঞ্চয়ী হিসাবে পড়ে আছে ৫৯ হাজার ১১০ টাকা। শোয়েবুর রহমান নামের ওই গ্রাহক ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে তার হিসাব থেকে লেনদেন করেছিলেন। এরপর শোয়েবুর বা তার পরিবারের কেউ এই অর্থের খোঁজ নিতে আসেননি। ব্যাংকের পক্ষ থেকে হিসাবে উল্লেখিত ঠিকানা বরাবর নোটিশ পাঠিয়েও সাড়া পায়নি ব্যাংক।
একই ব্যাংকের বিশ্বনাথ শাখার জাহেদ মিয়া নামে এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ৬৩ হাজার ৬০০ টাকা, বাসার উদ্দিনের অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার, গোয়ালাবাজার শাখায় ময়না মিয়ার অ্যাকাউন্টে ৪০ হাজার ৮৮০ টাকাসহ অদাবিকৃত কয়েক কোটি টাকা পড়ে আছে। এভাবে প্রাইম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়াসহ সরকারি-বেসরকারি বেশকিছু ব্যাংকে পড়ে আছে শত কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ব্যাংকগুলো ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে অদাবিকৃত ১৫ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা দেয়। ২০১৮ সালে জমা দেয় ১০ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার, ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার, ২০২০ সালে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকা জমা দেয়। সবশেষ ২০২১ সালে ৩৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা অদাবিকৃত অর্থ জমা হয়েছে।
সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে (২০২১ সালের ১২ আগস্ট পর্যন্ত) ব্যাংকগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া অদাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ১০৮ কোটি ১৮ লাখ ২২ হাজার ৫০২ টাকা ৯৭ পয়সা।
ইউএম