বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী মারা গেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তার মৃত্যুতে ইতোমধ্যেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংস্কৃতি অঙ্গনে। অনেকে শোক প্রকাশ করেছেন। ঠিক তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি।
কারণ, গত বছর পরীমণিকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ছিলেন গাফফার চৌধুরী। তাকে নিয়ে কবিতাও লিখেছিলেন তিনি।
তাকে নিয়ে লেখা ‘পরীমণি, তুমি কেঁদো না’ শিরোনামে কবিতাটি পরীমণি তার ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমি পেয়েছিলাম ওই দুর্লভরে। মিলিবে কী আর...!’
মাদক মামলায় পরীমণিকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে সরব ছিলেন তিনি। লন্ডন থেকে মোবাইলে ফোনে বিভিন্ন সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন কলামও।
অক্টোবরের দিকে একটি জাতীয় দৈনিকে পরীমণিকে নিয়ে কবিতাটি লিখেছিলেন গাফফার চৌধুরী; যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচিত হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন। তিন ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে বড় ভাই হোসেন রেজা চৌধুরী ও ছোট ভাই আলী রেজা চৌধুরী। বোনেরা হলেন- মানিক বিবি, লাইলী খাতুন, সালেহা খাতুন, ফজিলা বেগম ও মাসুমা বেগম।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’ ও ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।