সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন ২০১৮ এর ক্ষমতাবলে ‘সারা দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দেশের স্বাস্থ্য অধিদফর থেকে এই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে একমাত্র পন্থা জনসাধারণের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাস্তবায়ন করার উদ্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বলে জানান হয়।
অতি জরুরি কোনও কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
যদিও সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকে এই অনুরোধ করা হচ্ছে মানুষকে। মানুষকে ঘরে রাখা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাফেরা করা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনীও কাজ করছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টির ওপর বিশেষ জোর দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিটিতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তিতেও সন্ধ্যা ৬টার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে সংক্রামক রোগ আইনের ধারা প্রয়োগ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে নির্দেশে।
এসব আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সংক্রমণ রোগ আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচলও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও নির্দেশনাতে বলা হয়েছে।
আইইডিসিআর-এর ১৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের অন্তত ৪৫টি জেলায় পাওয়া গেছে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ সই করা চিঠিতে বলা হয়—
‘‘যেহেতু, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী করােনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করায় লক্ষ লক্ষ লােক আক্রান্ত হয়েছে ও লক্ষাধিক লােক মৃত্যুবরণ করেছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। হাঁচি, কাশি ও পরস্পর মেলামেশার কারণে এ রােগের বিস্তার ঘটে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে এ রােযার কোন প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ রােগের একমাত্র প্রতিষেধক হলাে পরস্পর হতে পরস্পরকে নিদিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা।
যেহেতু, জনসাধারণের একে অপরের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরােধ করা সম্ভব নয় এবং যেহেতু, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই রােগের সংক্রমণ ঘটেছে।
সেহেতু, সংক্রামক রোগ (প্রতিরােধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘােষণা করা হলাে।’’
ওই চিঠিতে সংক্রমিত এলাকার জনসাধারণকে নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করার জন্য অনুরােধ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
(১) করােনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়ােজন ছড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না।
(২) এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলাে।
(৩) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না।
এই আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সরকারী প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে আইনের সংশ্লিষ্ট অন্য ধারাগুলাে প্রয়ােগ করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করবে।’’
এসএমএম