অটোফাজি দিয়ে ঘুরিয়ে দিন দেহ ঘড়ি

ইশতিয়াক হোসেন প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২১, ০২:৩৬ পিএম অটোফাজি দিয়ে ঘুরিয়ে দিন দেহ ঘড়ি

সময় তার নিজ গতিতে দ্রুত ছুটে চলে। কারো জন্য থেমে থাকার সুযোগ তার নেই। সময়ের পরিক্রমায় ঘুরতে থাকে বয়সের ঘড়িও। আয়নায় তাকিয়ে অনেকেই চিন্তা করেন, সময়ের কাটা উল্টো পথে ঘুরিয়ে বয়সটাকে যদি কমিয়ে নেওয়া যেতো। সময়ের কাটা পিছিয়ে বয়স হয়তো কমানো যাবে না। তবে বয়োবৃদ্ধি ধীর করা সম্ভব। 

হ্যাঁ, অটোফাজি এমনই এক প্রক্রিয়া। যা দিয়ে বয়সের গতি একটু হলেও ধীর করা যায়। অটোফাজি হচ্ছে মানব বিবর্তনের সাথে সাথে তৈরি হওয়া একটি প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ায় শরীর নিজেকে সংরক্ষণের প্রচেষ্টা চালায়।

ইংরেজি শব্দ 'আটো' অর্থ নিজ, আর 'ফাজি' অর্থ ভক্ষণ। অর্থাৎ নিজেকে ভক্ষণ। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও কথা কিন্তু সত্যি। মানব দেহে অসংখ্য কোষ তৈরি হচ্ছে। যার কিছু সুস্থ আবার কিছু ত্রুটিযুক্ত ও অকার্যকর। আবার নানা রকম অনুজীব ও রোগজীবাণু শরীরকে আক্রমণ করে। অটোফাজি এই সব ত্রুটিযুক্ত কোষ পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে নতুন সতেজ কোষ তৈরি ও সংরক্ষণ করে। সেই সঙ্গে বহিশত্রু চিহ্নিত করে ধ্বংস করে।

অটোফাজি শরীরে সবসময়ই সক্রিয়। তবে কোষের সুস্থ স্বাভাবিক ক্রিয়াকর্মের জন্য যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে অটোফাজি প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন। কিছু পদ্ধতিতে অটোফাজি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা যায়। যেমন তিন বেলার পরিবর্তে দুই বেলা আহার গ্রহণ, আহারের মাঝে ১২-১৬ ঘণ্টা বিরতি রাখা। তবে আহার বিরতির সময় রঙ চা, আদা-কাচা হলুদ চা, লেবুর সরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। খাদ্যে প্রচুর শাক  সবজি রাখতে হবে। গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত শরীর চর্চাও অটোফাজি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত ও শক্তিশালী করে।

অটোফাজি শুধু বয়সই ধরে রাখে না, ওজন কমাতেও বেশ কার্যকর। যেমন অটোফাজিকে শক্তিশালী করতে চিনি, চাল, আটা ইত্যাদি খাবার কম খেতে হয়। বাইরে থেকে পর্যাপ্ত চিনি ও কার্বোহাইড্রেট না পেলে শরীর তার অকার্যকর কোষ ও জমে থাকা চর্বি কিটোসিস প্রক্রিয়ায় ভেঙ্গে শক্তি উৎপন্ন করে। ফলে শরীরের বাড়তি ওজন কমে আসে।

অটোফাজি নিয়ে এখনও বিস্তর গবেষণা হচ্ছে। তবে অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষায় সুস্থতার জন্য অটোফাজির কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।  আপনি অটোফাজির অনুশীলন করতে চাইলে কিটো ডায়েট, শরীর চর্চা এবং রোজা কিংবা উপশ থাকা শুরু করতে পারেন। তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন। শরীর ভালো রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। সেই সঙ্গে সুস্থ এবং নবীন থাকুন।