করোনা রোগীদের জন্য চালু হতে দেরী হচ্ছে রাজশাহী সদর হাসপাতাল

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২২, ০৩:৪১ পিএম করোনা রোগীদের জন্য চালু হতে দেরী হচ্ছে রাজশাহী সদর হাসপাতাল
ছবি- জাগরণ।

রাজশাহী ব্যুরো// 
রাজশাহী সদর হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য চালু হতে দেরি হচ্ছে। এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত ১৯০২ সালে। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর এটির গুরুত্ব কমে যায়। তখন এখানে স্থানান্তর করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিট। ২০০৪ সালে সদর হাসপাতালে ডেন্টাল ছাড়া অন্য সব চিকিৎসা বন্ধ হয়ে পড়ে। তারপর থেকে নিচতলায় ডেন্টাল ইউনিটের বহির্বিভাগ। আর দোতলাটি ব্যবহার হয়ে আসছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হোস্টেল হিসেবে।

করোনাকালের শুরুতে এ হাসপাতাল আবার চালুর বিষয়টি আলোচনায় আসে। গত বছরের জুনে করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ দেখা দিলে রামেক হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। একটির পর একটি সাধারণ ওয়ার্ড ছেড়ে দেওয়ার পরও রোগী রাখার জায়গা হচ্ছিল না। ওদিকে বিঘ্নিত হচ্ছিল অন্য রোগীদের চিকিৎসার। তাই সদর হাসপাতালটিই চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ দেয় মন্ত্রণালয়।

তারপর হোস্টেলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়ে সংষ্কার কাজ শুরু করে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২। ইতোমধ্যে কাজও প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু এখনও হাসপাতালটি চালু হয়নি। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ কমে এলেও এখন আবার বাড়ছে। রোগীও বাড়ছে রামেক হাসপাতালে। রোগী যখন কমেছিল, তখন এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডগুলোকেও আবার সাধারণ ওয়ার্ড করা হয়। ফলে এখন আবার রোগী নিয়ে সমস্যায় পড়ছে হাসপাতালটি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘করোনা হাসপাতাল করার জন্য আমরা দোতলা থেকে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিয়েছি। হাসপাতাল চালুর জন্য কাজও মোটামুটি শেষ। তবে এখনও চালু হয়নি। দোতলায় করোনা ইউনিট হলেও নিচতলায় ডেন্টাল ইউনিটের বহির্বিভাগ থাকবে।’

রোববার সকালে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় ডেন্টাল ইউনিটের বহির্বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। দোতলাটি সুনশান নীরব। ১৮-২০টি বড় বড় ঘরের সবগুলোরই দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, অক্সিজেন লাইনের জন্য পাইপও বসানো হয়েছে। ভবন পুরনো হলেও দোতলার সবখানেই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুধু সংষ্কার কাজের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। আর অক্সিজেন সরবরাহ লাইন করতে খরচ হয়েছে আরও প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। তিনি বলেন, ‘কাজ মোটামুটি শেষ। আগামী মাসে আমরা এটা বুঝিয়ে দিতে পারব।’

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, সদর হাসপাতালের দোতলায় অন্তত ২৫০টি শয্যা রাখা সম্ভব। তবে করোনা রোগীদের শয্যাগুলো একটু দূরত্ব রেখেই বসানো হবে। তাই শয্যা ধরা হচ্ছে ১৫০টি। এরমধ্যে বড় একটি হলরুমে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) করে ১৫টি শয্যা রাখা হবে। তিনি বলেন, ‘করোনা কিন্তু এখন আবার বাড়ছে। দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা দরকার। যত দেরি করব, তত বেশি সমস্যায় পড়তে হবে।’

সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন। জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ‘একটা হাসপাতাল চালু করতে হলে সেখানকার জনবল, শয্যা, মেডিকেল সামগ্রীসহ নানা বিষয় সংস্থানের ব্যাপার থাকে। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালটি চালুর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেব।’

 

এসকেএইচ//