তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীর। যদিও গত সপ্তাহে এই শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তাহির আহমেদ মীর নামে এক অভিযুক্তকে আটক করেছে রাজ্য পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দেশতির বার্তা সংস্থার প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, তবে নিজেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক প্রমাণের জন্য তাহির এরই মধ্যে স্থানীয় এক প্রাইভেট স্কুলের সার্টিফিকেট আদালতে হাজির করেছে। যে কারণে কাশ্মীরিদের ক্ষোভ এবার আছড়ে পড়েছে স্কুলটির ওপর। তাছাড়া অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের জন্য জোরালো দাবি তুলেছে উপত্যকার শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের কর্মীরা।
কাশ্মীর পুলিশের দাবি, গত সপ্তাহে তিন বছর বয়সী সেই শিশুটিকে মিষ্টির লোভ দেখিয়ে ত্রাইগাম গ্রামের পার্শ্ববর্তী একটি চত্বরে নিয়ে ধর্ষণ করেছিল তাহির। পরে বাড়ি ফিরে শিশুটি তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানালে তারা তাৎক্ষণিক অভিযুক্তকে পুলিশে ধরিয়ে দেন।
পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে শিশুটির মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। যেখানে তাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। যে কারণে আটক তাহিরের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ধর্ষণ ছাড়াও যৌন নিপীড়ন থেকে শুরু করে শিশু সুরক্ষা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।’
এ দিকে অভিযুক্তের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভরত অধিকার কর্মীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বেসজ কয়েকবার সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি স্কুলসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া আরও বিক্ষোভ এড়াতে এরই মধ্যে রাজ্যের সকল মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
নির্মম এ হামলার ঘটনায় এরই মধ্যে নিন্দা জানিয়েছে কাশ্মীরের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো। একই সঙ্গে তারা এই ধর্ষণের তদন্ত দ্রুত শেষ করার মাধ্যমে অভিযুক্তের বিচার সম্পন্নের দাবিও করেছেন।
অপর দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিটি নিজেকে শিশু প্রমাণের জন্য স্থানীয় একটি প্রাইভেট স্কুলের সার্টিফিকেট উপস্থাপন করলে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। যে কারণে ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরির জন্য স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়াসহ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী প্রতিষ্ঠানটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করেন।
একই সঙ্গে তাদের কয়েকজন আবার স্কুলটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশ এসে তাদের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপের মাধ্যমে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এসব বিষয়ে কাশ্মীর পুলিশের দাবি, দায়িত্ব-রত মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষার মাধ্যমে অভিযুক্তের বয়স শনাক্ত করবে। অভিযুক্তের পক্ষে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের দেওয়া সার্টিফিকেট তারা আমলে নেননি। যদিও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন এমন আশঙ্কায় সেই শিক্ষককে পুলিশি নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এসকে