শিশু ধর্ষণ বা তাদের ওপর চালানো ভয়াবহ যৌন অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি স্বরূপ মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইনের বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধন করেছে ভারতের মন্ত্রিসভা। যেখানে বলা হয়, কোনো শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে সে ব্যক্তির শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।
বুধবার (১০ জুলাই) স্থানীয় সময় রাতে রাজধানী নয়া দিল্লিতে 'প্রটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পিওএসসিও) অ্যাক্ট ২০১২' বিলটি সংশোধন করেছে ভারতীয় মন্ত্রিসভা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের এক বিশেষ বৈঠকে বিলটির বিষয়ে প্রথম ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকার গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, 'এবারের আইনটিতে মোট ১৪টি সংশোধনী আনা হয়েছে। যেখানে শিশু পর্নোগ্রাফি বন্ধে জরিমানা ও জেলের বিধান রাখার কথাও উল্লেখ রয়েছে।'
বিশ্লেষকদের মতে, শিশু নির্যাতন ইস্যুতে করা এই সংশোধনী গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথমে উচ্চকক্ষে বিল আকারে উত্থাপিত হয়েছিল। যদিও তখন লোকসভা নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাওয়ায় বিলটি আর পাস করানো যায়নি।
|| যা রয়েছে এই সংশোধনীতে ||
আইন সংশোধনীতে বলা হয়, কোনো ব্যক্তির কাছে শিশু পর্নোগ্রাফি বিষয়ক কোনো উপাদান থাকলে তাকে তিন বছর পর্যন্ত জেল দেওয়া যাবে। তাছাড়া শিশুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নির্যাতনের দায়ে শাস্তির কথা উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি নতুন সেকশন এতে যুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ডিজিটাল অপরাধও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
একই সঙ্গে ধারা ৪, ৫ ও ৬ এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে শাস্তি মেয়াদ ৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর, ১০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ২০ এবং তা ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়েছে।
পাশাপাশি ধারা ১৪ ও ১৫ এর অধীনে শিশু পর্নোগ্রাফি বিষয় কাহিনী নির্মাণ; এসব বিষয়ক উপাদান মুছে না ফেলা এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরির জন্য শাস্তি স্বরূপ ১০০০ রুপি জরিমানা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
'প্রটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পিওএসসিও) অ্যাক্ট ২০১২' বিলটিতে শিশু পর্নোগ্রাফি বিষয়ক ম্যাটেরিয়াল শিশুদের কাছে পৌঁছে দেওয়াকেও শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। যে কারণে একে তথ্য প্রযুক্তি আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার প্রস্তাব করেন পার্লামেন্টের আইন প্রণেতারা। একই সঙ্গে সংশোধনীতে শিশুদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে দাবি করা হয়।
এসকে