২২ জুলাই চাঁদে পাড়ি দিচ্ছে চন্দ্রযান-২

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০১৯, ০২:৫৪ পিএম ২২ জুলাই চাঁদে পাড়ি দিচ্ছে চন্দ্রযান-২

আগামী সোমবার (২২ জুলাই) চাঁদের দেশে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান-২। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে দুপুর ২টা ৪৩ মিনিট নাগাদ ফের উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে চন্দ্রযান-২ এর। বৃহস্পতিবার টুইট করে একথা জানিয়েছে ইসরো। গত সোমবার শেষ মুহূর্তে প্রযুক্তগিত ত্রুটির জেরে বাতিল হয়ে যায় চন্দ্রযান-২ অভিযান।

সোমবার (১৫ জুলাই) প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে স্থগিত রাখা হয় অভিযান। ঠিক কী সমস্যা হয়েছে, সে ব্যাপারে বিশদে জানায়নি ইসরো। এক বিবৃতিতে ইসরোর তরফে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রাত ২টা ৫১ মিনিট নাগাদ অভিযানের কথা ছিল। রকেট উৎক্ষেপণের উৎক্ষেপণের ৫৬ মিনিট এবং ২৪ সেকেন্ড আগে অভিযান বাতিল করা হয়।

সূত্র মারফৎ জানা যায়, জিএসএলভি-এমকে-থ্রি রকেটে জ্বালানি ভরার সময় গোলযোগ দেখা যায়। রকেটে তরল হাইড্রোজেন ভরার সময় ত্রুটি দেখা যায় বলে খবর। উল্লেখ্য, ইসরোর তৈরি এই রকেট অত্যন্ত শক্তিশালী। চন্দ্রযান ২-এর অভিযান ঘিরে রবিবার সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল শ্রীহরিকোটায়। সন্ধের পর থেকে রীতিমতো কাউন্টডাউন শুরু হয়েছিল। চন্দ্রযান ২-এর অভিযানের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। শেষ মুহূর্তে তা বাতিল হওয়ায় হতাশ হয় সব মহল। এদিন ফের চন্দ্রাভিযানের খবর মেলায় নতুন করে কাউন্টডাউন শুরুর অপেক্ষায় গোটা দেশ।

১০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে এই চন্দ্রাভিযান সফল করার লক্ষ্যে। চন্দ্রায়ন-২, যে চন্দ্রাভিযানে সাফল্য পেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর চতুর্থ দেশ হিসাবে ইতিহাস গড়তে পারবে ভারত। প্রথমবারের প্রযুক্তিগত সমস্যার পর আরো সতর্ক হয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রটি, আগামী সোমবার যাতে সব বাধা কাটিয়ে সফলভাবে ওই মহাকাশযানকে উৎক্ষেপণ করা যায় তার জন্যে সবরকম প্রস্তুতিই নিয়ে রাখছে ইসরো।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর একজন কর্মকর্তা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, যদি আগের দিন উৎক্ষেপণের সময় ওই সমস্যাটি  সমাধান করা না হত, তবে চন্দ্রায়ন ২ “পুরোপুরি ব্যর্থ” হত। “সমস্যাটা গুরুতর ছিল, কিন্তু সেটি সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে, আমরা চন্দ্রায়ন-২ উৎক্ষেপণের আগে আগেই  সমস্যাটি ধরতে পেরেছিলাম। আর সেটা ধরতে পারায় ওই সতর্কতা অবলম্বন করি আমরা, এক বিলিয়ন ভারতীয়ের প্রার্থনা এবং  শুভেচ্ছা এই মিশনটির ব্যর্থতা এড়াতে সাহায্য করেছিল”, বলেন ওই কর্মকর্তা।

প্রযুক্তিগত সমস্যাটি জটিল ক্রোজেনিক পর্যায়ে ছিল, এই ধরণের সমস্যা মহাকাশ অভিযানের একেবারে শেষ পর্যায়গুলিতেই সাধারণত ধরা পড়ে। ক্রিজনীয় পর্যায়ে ব্যবহৃত উচ্চ দহনশীল হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন ওই রকেট থেকে সরানো হয় এবং সমস্যাটির সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে এনডিটিভিকে জানান ইসরোর ওই কর্মকর্তা।

৬৪০ টন ওজনের রকেটটির আনুষ্ঠানিক নাম জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেইকেল মার্ক থ্রি (জিএসএলভি এমকে থ্রি), যা মূলত ‘বাহুবলী’ নামেই পরিচিত। এই রকেটটি ৪৪ মিটার দীর্ঘ বা বলা যায় একটি ১৫ তলা ভবনের সমান লম্বা।

লিফট অফে, জিএসএলভি রকেটটিই একটি অরবিটার হিসাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে, যার মাধ্যমে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ (ইএসআরও প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশিষ্ট ভারতীয় বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই নামে নামকরণ) এবং মুন রোভারের ‘প্রজ্ঞান’ -কে পাঠানো হবে।

চাঁদের মাটিতে অবতরণের পর, যাকে ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান  “পনের মিনিটের সন্ত্রাস” নামে উল্লেখ করছেন, সেটি গবেষণা শুরু করবে, চাঁদের সম্পদের পুঙ্খানুপুঙ্খ ম্যাপিং সহ, সেটি সন্ধান করবে চাঁদের মাটিতে জলের বিষয়েএবং পাশাপাশি উচ্চ রেজুলেশন যুক্ত ছবিও তুলবে সেটি বলে জানা গেছে।

ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান চন্দ্রায়ন-২ কে “এখনও পর্যন্ত ইসরোর হাতে আসা সবচেয়ে জটিল মিশন” বলে অভিহিত করেছেন।

সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এসজেড