উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য করা সাংবিধানিক ঘোষণার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিল ও প্রধান বিরোধী জোট। শুক্রবার (২ আগস্ট) আফ্রিকান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিষয়টিতে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ হাসান লেবাত গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের বরাতে এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানায়, গত ১৭ জুলাই দেশটিতে বিক্ষোভকারী ও ক্ষমতাসীন সামরিক শাসকরা নিজেদের ক্ষমতা ভাগাভাগি ইস্যুতে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। যার মাধ্যমে দেশটি শাসনের জন্য একটি বেসামরিক প্রশাসন গঠনের সুযোগ তৈরি হলো বলে দাবি বিশ্লেষকদের। যদিও মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
স্বাক্ষরিত চুক্তিটি অনুযায়ী আগামী তিন বছরের জন্য ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিল ও প্রধান বিরোধী জোট একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবে। যেখানে অন্তত ছয় বেসামরিক ও পাঁচ জেনারেলের সমন্বয়ে সেই সরকার পরিচালনা কমিটিটি গঠন করা হবে।
এ দিকে ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের উপপ্রধান মোহাম্মাদ হামদান দাগালো গতমাসের চুক্তিটিকে 'সুদানের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত' বলে এরই মধ্যে অভিহিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল দেশটিতে জ্বালানি ও রুটির দাম বৃদ্ধির এক সরকারি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মুখে আচমকা সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। ১৯৮৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা এই প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের পর বিক্ষোভকারীরা একটি বেসামরিক প্রশাসন গঠনের জন্য সামরিক জান্তা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাতে শুরু করেন।
পরবর্তীতে গত ৩ জুন এক দিনেই বিক্ষোভরতদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান অন্তত ৮৭ জন। এতে আহত হন আরও কমপক্ষে ১৬৮ বেসামরিক। তাছাড়া রাজধানী খার্তুমের বিভিন্ন সড়কে এখনো আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের সদস্যরা ঘুরে ঘুরে বেসামরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
বিশ্লেষকদের মতে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাতের পেছনে সেনাবাহিনীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের মতো শক্তিশালী দেশ। যদিও গত জুনে সুদানের জান্তা সরকারের ব্যাপক ধরপাকড় বন্ধে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।