জম্মু ও কাশ্মীরে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে একটি সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে। আর সেই সম্ভাবনা হল, কেন্দ্র হয়তো রাজ্যের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস'-এ বড় বদল আনতে চাইছে। যে দুই সংবিধানের ধারা আলোচনায় উঠে আসছে সেগুলি হল ৩৫এ ও ৩৭০ ধারা। নির্বাচনী ইস্তেহারেও বিজেপি এই দুই ধারা সম্পর্কে তাদের ক্ষোভপ্রকাশ করে।
৩৫এ ধারা কী
৩৫এ ধারা সংবিধানে যুক্ত হয় ১৯৫৪ সালে জওহরলাল নেহরু মন্ত্রিসভার পরামর্শে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের নির্দেশে। ৩৫এ ধারা ৩৭০ ধারার উপরে তৈরি। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' পায়। এই ধারার ফলে জম্মু ও কাশ্মীর সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার পায় যে কারা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তাদের বিশেষ অধিকার দেওয়া হয়েছে সরকারি চাকরি, সম্পত্তি ক্রয়, বৃত্তি ও অন্যান্য প্রকল্পে।
জম্মু ও কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে পরিগণিত হন তাঁরা, যাঁরা ১৯১১ সালের আগে জন্মেছেন বা এখানে বাস করছেন অথবা ওই তারিখের পরে ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে আইনত স্থাবর সম্পত্তির মালিক এবং এখানকার বাসিন্দা। রাজ্যের যে মহিলারা রাজ্যের বাইরের কোনও বাসিন্দাকে বিয়ে করেন, তাঁদের সন্তানরা ওই অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। ২০০২ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, যে মহিলারা অস্থায়ী বাসিন্দাদের বিয়ে করবেন তাঁরা তাঁদের অধিকার হারাবেন না। এই আইনের ফলে রাজ্যের অস্থায়ী বাসিন্দারা এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারবেন না এবং জমি ক্রয় করতে পারবেন না। পাশাপাশি সরকারি চাকরি ও বৃত্তিও পেতে পারবেন না তিনি।
৩৫এ নিয়ে বিজেপি কী চায়
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারিত ইস্তেহারে বিজেপি জানায়, ‘‘আমরা সংবিধানের ৩৫এ ধারা রদ করতে দায়বদ্ধ। এই ধারায় বৈষম্য রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের মহিলা ও অস্থায়ী বাসিন্দাদের প্রতি। আমরা বিশ্বাস করি ৩৫এ ধারা রাজ্যের উন্নয়নের পথে একটি বাধা। আমরা রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দাদের একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দিতে চাই। গত পাঁছ বছরে আমরা নিশ্চিত পদক্ষেপ ও সঠিক নীতির সাহায্যে প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা করেছি জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি আনতে। আমরা দায়বদ্ধ উন্নয়নের পথের বাধা সরাতে এবং রাজ্যের সমস্ত ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সুবিধা দিতে। জনসঙ্ঘের আমল থেকেই আমরা ৩৭০ ধারা রদ করতে চেয়েছি।”
তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের নির্বাচনী ইস্তেহারে এই বিষয়ে কোনো দাবি করেনি বিজেপি।
অপরদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, ৩৫এ ধারার ফলে রাজ্যের বাসিন্দাদের পরিচিতি রক্ষা পায় ও কর্মসংস্থান থেকে বৃত্তি সব ক্ষেত্রে রাজ্যের বাসিন্দাদের অধিকার বজায় থাকে।
সূত্র : এনডিটিভি
এসজেড