কোভিড-১৯ এ ক্রমেই নাজুক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে বেশি সাড়ে ৪ লাখ আক্রান্ত দেশটিতে। একদিনে নতুন করে ৯ বাংলাদেশিসহ প্রাণ গেছে প্রায় ১৯০০ জনের। সব মিলে এ পর্যন্ত ১০০ বাংলাদেশিসহ সাড়ে ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
ইতালিতে প্রাণ হারানো ১৮ হাজারের মধ্যে শতাধিক চিকিৎসক। ফ্রান্সে হাজারখানেক এবং স্পেনে এ পর্যন্ত ১৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আশা, ওষুধ প্রস্ততকারক কোম্পানি-ফাইজার উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রণালিতে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে কোভিড-১৯।
মরদেহে পাল্লা ক্রমেই ভারি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। একের পর এক শেষবিদায় কোভিড-১৯ এ প্রাণ হারানো হতভাগ্যদের। স্বজনরা শেষকৃত্যে অক্ষম এমন মরদেহ দাফন করা হচ্ছে নিউ ইয়র্কের হার্ট আইল্যান্ডে।
জেসাস পুজলস। মিনিভ্যানেই রাত কাটছে ২৩ বছর বয়সী নিউ ইয়র্কের এ শেষকৃত্য কর্মীর। গেল সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করেন তিনি। ইতালি ও স্পেনের মোট আক্রান্তের চেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী এখন নিউ ইয়র্কে। প্রাণহানির সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিন তালিকায় যোগ হচ্ছে বাংলাদেশিদের নাম।
নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল দে ব্লাসিও বলেন, নিউ ইয়র্কে খুব দ্রুতই সংক্রমন ছড়াচ্ছে। পরিস্থিতি অবর্ণনীয়। এপ্রিল মাস কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। এখনই সতর্ক না হলে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
২ হাজার মরদেহের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মর্গ চালু হয়েছে ইলিনয়তে। ৬ জন আক্রান্তের পর বিক্ষোভ করেছেন ওয়াশিংটনের কারাগারে থাকা আড়াই হাজার বন্দি। টেক্সাসের কারাগারের বন্দিরাও এখন তৈরি করছেন মাস্ক। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করা স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এমন সাদা-কালো সাজে নিউ ইয়র্কের বেশ কিছু সুউচ্চ ভবন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, এটা ঠিক আক্রান্তে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে। তবে, জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই কোভিড-১৯ চিকিৎসা এবং থেরাপি পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টায়ও অগ্রগতি হয়েছে। ওষুধ প্রস্ততকারক কোম্পানি-ফিজার নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির তথ্য দিয়েছে, যা ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম হবে এবং দ্রুতই এটি ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করা হবে।
স্পেনে হাসপাতালগুলোতে ভিড় কোভিড-১৯ রোগীর। বার্সেলোনার এই হাসপাতালের ৭ টি তলাই পরিণত করা হয়েছে কোভিড-১৯ ইউনিটে। দেশটিতে আক্রান্তের মধ্যে ১৯ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী।
হসপিটাল ডেল মার পরিচালক ডা. জুলিও প্যাসকুয়াল বলেন, এক মাস ধরে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী আসছে এখানে।
মেডিসিন, সার্জন কিংবা চোখের চিকিৎসক সবাই এখন করোনা রোগীর চিকিৎসায় কাজ করছেন। এমনকি মেডিকেলের শেষবর্ষের শিক্ষার্থীরাও নেমেছেন এ লড়াইয়ে।
করোনার লড়াইয়ে টালমাটাল পুরো ইতালি। এরই মধ্যে শতাধিক চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্তের তালিকায় ফ্রান্সের চিকিৎসক, নার্সসহ হাজারখানেক স্বাস্থ্যকর্মী। যাদের অনেকে আবার কিছুটা সুস্থ হয়ে ফের নেমেছেন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে।
বিচাট হামপাতালের অ্যানেস্থেসিওলোজি অ্যান্ড আইসিইউ প্রধান ফিলিপ মন্ট্রাভার্স বলেন, রীতিমত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে আমরা। আহত মানুষ ফের আবার যুদ্ধক্ষেত্রে ছুটে আসছে।
ফ্রন্টলাইনদের উৎসাহ যোগাতে লন্ডনের পথে পথে চলছে এমন আয়োজন। লকডাউনে জনগণের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ভারত-পাকিস্তান।
এসএমএম