এ মাসের ৭-৮ তারিখে চীনের ডালিয়ান বিমানবন্দরে উত্তর কোরিয়ার রহস্যময় একটি বিমান জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের সঞ্চার করে।
পরে জানা গেছে বিমানটি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের, যিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংএর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে কিমের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যে কারণে বিদেশ যাত্রায় তার বাহন কি হয়, তা নিয়েও আছে কৌতূহল। কেননা প্রতি যাত্রায় তিনি প্রায় ভিন্ন ভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে আসছেন।
বিমান কেবল ইলিউশিন কোম্পানির
কিমের ক্ষমতায় আসীন হবার পর এই প্রথম এ সপ্তাহে চীনে সফরের সময়ে তার কোনও বিমানযাত্রা ‘কনফার্মড’ বা নিশ্চিত করে জানানো হয়েছিল।
তবে দেশটির গণমাধ্যমের রিপোর্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার ভেতরে নিজের ব্যক্তিগত জেট নিয়ে ঘোরাফেরা করেন তিনি।
যে বিমানে তিনি চীন ভ্রমণ করেছেন, সেটি সোভিয়েত ইউনিয়নে বানানো একটি দূর পাল্লার বিমান, মডেল ইলিউশিন-৬২।
সাদা রঙ এর বিমানটির দুই পাশে উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম কোরীয় হরফে লেখা, এর পাশেই দেশটির পতাকা।
বিমানের লেজের কাছে ভেতরে লাল ও নীল চক্র আকা লাল তারকা।
ভেতরে আছে অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা। কিমকে ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং করতে দেখা গেছে।
বিশাল ট্রেন
কিম জং আন যখন এ বছরের মার্চে বেইজিং গেলেন, তিনি একটি বিশেষ ট্রেনে চেপে সে দেশে গিয়েছিলেন।
জনমনে বিশ্বাস এটি ২০১১ সালে মারা যাওয়া তার বাবার ব্যবহার করা একই ট্রেন।
চীন সফরের সময় ঘন সবুজ রঙ এর ওপর একটি হলুদ রেখা টানা ট্রেনটির ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে কিম জং ইলের ব্যবহার করা ট্রেনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছিলেন সেসময়।
ট্রেনটিতে মোট ৯০টি ক্যারিজ বা বগি রয়েছে। এতে শোবার ঘর, কনফারেন্স রুম, হলরুম, স্যাটেলাইট ফোন এবং টেলিভিশন বসানো আছে।
ট্রেনের আসবাবের প্রায় সবই সাদা রঙ এর। তবে, সোফার রঙ কিছুটা বদলে কিম কোরাল রঙ এর কাভার দিয়েছেন।
কিমের বাবা কিম জং ইলের মৃত্যু হয় এই ট্রেনে।
মার্সিডিজ বেনয লাগবে না?
বেইজিং এ সর্বশেষ সফরের সময় কিম শহরের মধ্যে ঘুরে বেরানোর জন্য নিজের ব্যক্তিগত মার্সিডিজ বেনয এস-ক্লাস ব্যবহার করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার জুংঅং লিবো পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, গাড়িটি কিমের ট্রেনে করে নিয়ে আসা হয়েছিল।
২০১০ সালে প্রস্তুতকৃত গাড়িটির আনুমানিক মূল্য দুইশো কোটি কোরীয় ওন অথবা ১৮ লাখ মার্কিন ডলার।
২৭ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে সীমান্তে বৈঠক করার সময় তিনি নিজে সেটি চালিয়ে এসেছিলেন।
রহস্যময় ইয়ট
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার সরবারহকৃত বিভিন্ন ছবিতে নানা সময় দেখা গেছে কিম জং আন নৌকায়, সাবমেরিনে, বাসে, এমনকি স্কি করার সরু কাঠের পাত পায়ে হাঁটছেন বরফে।
কিন্তু গুজব আছে যে তার আরেকটি প্রিয় বাহন আছে।
কিন্তু সেটি এখনও দেখা যায়নি, হয়ত আসছে কোনও সফরে সেটি দেখা যাবে।
২০১৩ সালে সেনা পরিচালিত একটি মাছ ধরার কেন্দ্রে আনের সফরের সময় পেছনে একটি ইয়ট দেখা যায়।
৭০ লাখ মার্কিন ডলার দামের এই ইয়টের মালিক আন কিনা সে বিষয়ে কোনও নিশ্চিত তথ্য নেই।
তবে আনের নিজের একাধিক হেলিকপ্টার রয়েছে। বিবিসি।
এসএমএম