প্রায় পাঁচ মাস সময় পেরিয়ে আসার পর বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যায় কিছুটা উন্নতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
গত ১২ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত টানা ৯দিন ধরে বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমছে।
চলতি মাসের ১২ তারিখে করোনায় মৃত্যু ছিল দুই লাখ ৯২ হাজার ৭৪৪ জন যা। ২০ মে (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত ৩ লাখ ২৫ হাজার ১২৫।
করোনা মহামারির সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশ করা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো বলছে, বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ১২৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৬ জন রোগী।
করোনা মহামারির গত সাত দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১২ মে বিশ্বজুড়ে করোনায় মারা যান ৫ হাজার ৫৬১ জন। এর পরদিন মৃত্যু হয় ৫ হাজার ৩৬৪ জনের। এভাবে কমতে কমতে ১৬ মে এসে মৃত্যু ৫ হাজারের নিচে নামে। তার পরদিন মৃত্যু ৪ হাজারের নিচে নামে। ওই দিন করোনা কেড়ে নিয়েছে ৩ হাজার ৬১৮ জনের প্রাণ। আর গত সোমবার মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৪৫ জন। গত ২৯ মার্চের পর এ দিনই সবচেয়ে কমসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। ২৯ মার্চ করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৪৩ জন।
মঙ্গলবার (১৯ মে) হাজার খানেক মৃত্যু বাড়ে। সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় চার হাজার ৫৮৯জন।
জুন শেষে মৃত্যুর হার শূন্যে নামবে
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৩৪১ জন।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (ওএনএস) এক পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবার দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৪৫ জন (দৈনিক ভিত্তিতে গত সপ্তাহের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম)। তার আগের সপ্তাহে ১১ মে মারা যায় ৬২৭ জন। ৯ এপ্রিল এ সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৫২ জন। অর্থাৎ আগের তুলনায় দেশটিতে দৈনিক মৃতের হার কমছে।
তার আগে গত ৮ মে ছিল শুক্রবার। ওএনএস বলছে, ওই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কেয়ার হোমগুলোতে মৃতের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৪৮ জন। তার আগের সপ্তাহে ছিল ৬ হাজার ৪০৯ জন। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেয়ার হোমে মৃতের সংখ্যা কমেছে ২ হাজার ১৬২১ জন। এর মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১ হাজার ৬৬৬ জন।
যুক্তরাজ্যে বিগত তিন সপ্তাহের পরিসংখ্যান তুলে ধরে অধ্যাপক কার্ল হেনেঘান বলেছেন, ‘আমি মনে করি, যদি করোনায় মৃতের হার এভাবেই কমতে থাকে তাহলে আমি বলব, জুন শেষে কোভিড-১৯ আক্রান্ত লোকজনকে খুঁজে পাওয়াই কষ্ট হয়ে যাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম প্রতিষেধক পরীক্ষা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের ওপর প্রয়োগ করা প্রথম করোনাভাইরাস প্রতিষেধকের ফল আশা জাগাচ্ছে এবং মানুষের শরীর প্রত্যাশা মতো সাড়া দিচ্ছে বলে জানালেন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মডার্না।
গত মার্চে আমেরিকার আট ব্যক্তির ওপর ওই প্রতিষেধকের দুটি করে ডোজ প্রয়োগ করা হয়। ওই ফলের ওপর ভিত্তি করে আশাবাদী হয়ে উঠছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিষেধক দেয়ায় তাদের শরীরে যে এ্যান্টিবডি তৈরি হয় তা পরীক্ষাগারে মানব কোষের ওপর পরীক্ষা করা হয়। গবেষণা ঠিকঠাক মতো হলে আগামী জানুয়ারিতে সবার হাতের নাগালে চলে যাবে এই প্রতিষেধক।
মডার্নার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ট্যাল জ্যাকস বলেছেন, ‘এটা খুবই আনন্দের সংবাদ এবং দীর্ঘ সময় ধরে এমন সংবাদের জন্য অনেকে অপেক্ষা করছে বলে আমরা মনে করি।’
এসএমএম