আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর জোট নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নেতা আহমাদ মাসুদের নেতৃত্বে পাঞ্জশির উপত্যকা অঞ্চলে তালেবানবিরোধী শক্তি সংগঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
বৃহস্পতিবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, ‘তালেবানগোষ্ঠী এখনও পুরো আফগানিস্তানের দখল নিতে পারেনি। আমাদের কাছে তথ্য আছে- পাঞ্জশির উপত্যকায় আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালে এবং আহমাদ মাসুদ তালেবানবিরোধী দলগুলোকে একত্রিত করছেন।’
আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি সার্বজনীন সরকার গঠনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, আবারও বলছি- তালেবানগোষ্ঠী যদি আফগানিস্তানে প্রকৃত অর্থে শান্তি স্থাপন করতে চায়, সেক্ষেত্রে একটি সার্বজনীন সরকার গঠনের পথে তাদের এগোনো উচিত।’
২০০১ সালে মার্কিন সামরিক অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত তালেবানগোষ্ঠী চলতি বছর মে মাস থেকে আফগানিস্তান দখলের অভিযান শুরু করে এবং মাত্র আড়াই মাসে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের ২৮ টি নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়। গত ১৫ আগস্ট দেশটির রাজধানী কাবুলের দখলও চলে যায় তালেবান বাহিনীর হাতে।
এদিকে তালেবান বাহিনী কাবুলে প্রবেশের দিন ১৫ আগস্ট কাবুল ত্যাগ করেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ।
কাবুল ত্যাগের সময় আশরাফ গনি বিপুল পরিমাণ অর্থ সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন- এ খবরও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রথম নিশ্চিত করেছিল রাশিয়া। পরে জানা গেছে, মোট ১৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার নিয়ে পালিয়েছেন তিনি। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন তিনি।
তবে আমরুল্লাহ সালেহ দেশত্যাগ করেননি। তালেবান বাহিনী কাবুল দখলের দুই দিন পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক ভিডিওবার্তায় নিজেকে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করে তালেবানদের সর্বাত্মক প্রতিরোধেল ডাক দেন তিনি। পরে জানা গেছে, পাঞ্জশিরে নদার্ন অ্যালায়েন্সের প্রধান আহমাদ মাসুদের আশ্রয়ে আছেন আমরুল্লাহ সালেহ।
কাবুলের উত্তরপূর্বে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকার দখল কখনো নিতে পারেনি তালেবানগোষ্ঠী। ১৯৯৬ সালে যখন প্রথমবার তালেবানগোষ্ঠী আফগানিস্তানে সরকার গঠন করেছিল, তখনও পাঞ্জশির ছিল তালেবানমুক্ত।
এমনকি আশির দশকে যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান দখল করেছিল, সে সময়ও পাঞ্জশিরের দখল কেউ পায়নি।
জাগরণ/এসকেএইচ