গত রবিবার কাবুল দখল করেছে তালিবান। সরকার গঠনের জন্য কথাবার্তা চালাচ্ছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে। এর মাঝেই বারবার দাবি করেছে, আগের শাসনকালে যতটা নৃশংস, কট্টর ছিল, এখন আর তা নেই তারা। বরং মহিলাদেরও সরকার, প্রশাসনে যোগ দেওয়ার ডাক দিয়েছে। কিন্তু কথায় আর কাজে এখনও দারুণ ফারাক তালিবানদের। রোজই প্রমাণ করছে তারা।
এর আগে মহিলা সঞ্চালককে চ্যানেলের দপ্তরে ঢুকতে দেয়নি। এবার বিরোধীদের টুঁটি চেপে ধরল। তালিবান বিরোধী যোদ্ধাদের ২০টি শিশুকে অপহরণ করল তারা। শিশুগুলিকে অপহরণ করেই তাদের ঘোষণা, বাবাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। এভাবেই আসলে বিরোধীদের গোড়াতে মারতে চাইছে তালেবান।
গোটা আফগানিস্তানই দখলে নিয়েছে তালেবানরা। শুধু দেশের উত্তরে পঞ্জশিরে আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) রুখে দিয়েছে তালিবানদের। মাসুদের সঙ্গে রয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লা সালেহ এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লা মহম্মদি। গনি দেশ ছেড়ে পালানোর পর সালেহ নিজেকে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন।
মহম্মদি টুইটারে জানিয়েছেন, তালেবানবিরোধী বাহিনী পঞ্জশির ছাড়াও পুল–এ–হেসার, বানু, দেহ্ সালাহ অধিকার করেছে। সেখান থেকে তালেবানদের উচ্ছেদ করেছে। শোনা গিয়েছে, প্রায় ১০০ তালিবান জঙ্গি এই বাহিনীর হাতে মারা গিয়েছে। রিপোর্ট বলছে, এই এনআরএফ ৯০০০ জওয়ানকে সংগঠিত করে যুদ্ধ চালাচ্ছে। এই জওয়ানদের উপত্যকাতেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
তালেবান বারবার এই এনআরএফ বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে। মাসুদ সাফ জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণ করবেন না। তার মধ্যেই ওই বাহিনীরই ২০ জন জওয়ানের শিশুসন্তানকে অপহরণ করা হলো। জানিয়ে দেয়া হয়েছে মাসুদ বাহিনী ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করলে ফিরিয়ে দেয়া হবে শিশুগুলিকে।
অতীতে রুশ বাহিনী এসে জোর ধাক্কা খেয়েছিল পাহাড় ঘেরা এই উপত্যকায়। এবার তালেবান। গোটা আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নিলেও এই পঞ্জশিরকে অধিকার করতে পারেনি তারা। আমেরিকার ছেড়ে যাওয়া আধুনিক অস্ত্র দিয়েও নয়। রুশ বাহিনী হার মেনেছিল আহমেদ শাহ মাসুদের কাছে। আর তালেবান ধাক্কা খেল তাঁর ছেলে আহমেদ মাসুদের কাছে।
সূত্র- আজকাল।
জাগরণ/এসকেএইচ