বন্ধু দেশগুলোর বাইরে বিক্রি করা গ্যাসের দাম রাশিয়ার মুদ্রা রুবলে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা ইউরোপের জ্বালানি সংকটকে আরও জটিল করবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (২৩ মার্চ) প্রেসিডেন্ট পুতিন এ ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, পুতিনের বার্তা স্পষ্ট, ‘যদি গ্যাস চাও, রুবল কিনো।' অবশ্য ইউরোর মাধ্যমে লেনদেনের যে চুক্তিগুলো রয়েছে, রাশিয়া একপাক্ষিকভাবে সেগুলো পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না, তা অস্পষ্ট।
এদিকে, পুতিনের আকস্মিক ঘোষণার পর রুবলের দামে উল্লম্ফন দেখা দেয়। এক ডলারের বিপরীতে ৯৫ অতিক্রম করে রুবল, যা তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরে দাম পড়ে গেলেও ১০০-এর মধ্যেই ছিল, ডলারের বিপরীতে ৯৭.৭-এ দিন শেষ করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ডলারের বিপরীতে রুবলের পতন ২২ শতাংশের বেশি।
এর আগে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইউরোপের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু, গৃহস্থালির কাজ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপ। তাই, তাদের জ্বালানি খাতে অবরোধ আরোপ করা হবে কি না, এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বুধবার (২৩ মার্চ) কিছু ইউরোপীয় পাইকারি সরবরাহে গ্যাসের দাম ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। ব্রিটিশ ও ডাচ পাইকারি সরবরাহেও গ্যাসের দামে উল্লম্ফন দেখা যায়। ইউরোপের পুরো গ্যাস ব্যবহারের ৪০ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। চলতি বছর প্রতিদিন রাশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাস আমদানি ২০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ইউরোয় ওঠা নামা করছিল।
অন্যদিকে, জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক পুতিনের দাবিকে চুক্তি ভঙ্গের সঙ্গে তুলনা করেছেন। রুশ গ্যাসের অন্য ক্রেতারাও একই কথা বলেছেন। পোলিশ সরকারের একটি সূত্র বলেছে, ‘বর্তমান চুক্তিসহ এটি অর্থ পরিশোধ বিধি লঙ্ঘনের শামিল।’ চলতি বছরের শেষ নাগাদ বর্তমান চুক্তি শেষ হওয়ার পর গ্যাজপ্রমের সঙ্গে তাদের নতুন করে চুক্তি সইয়ের ইচ্ছা নেই বলেও সূত্রটি জানিয়েছে। বড় বড় ব্যাংকও রুশ সম্পদের বিপরীতে লেনদেনে অনিচ্ছুক, যা পুতিনের দাবিকে আরও জটিলতর করেছে।
ইউএম