মিয়ানমারে চার গণতন্ত্রপন্থী কর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের প্রতি গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জান্তার ওপর চাপ বাড়াতে চীনকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি, অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে চীনের ওপর মিয়ানমারের নির্ভরশীলতা অনেক বেশি। তাই দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তাকে চাপে রাখতে আমরা চীনের সক্রিয় ভূমিকা একান্তভাবে প্রত্যাশা করছি।’
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করার অভিযোগে গত বছর নিরাপত্তা গ্রেপ্তার হন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী কর্মী কিয়াও মিন ইউ ওরফে কো জিমি ও সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য ও দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির মিত্র ফিও জেয়া থাও।
এছাড়া জান্তাকে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের গোপন তথ্য দেওয়ার অভিযোগে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় হ্লা মিও অং এবং অং থুরা জাও নামে দুই গণতন্ত্রকর্মীকে।
গত বছর রাজধানী ইয়াঙ্গুনে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার পর জান্তা নিয়ন্ত্রিত রুদ্ধদ্বার আদালতে কয়েক মাস বিচার শেষে চলতি জানুয়ারিতে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন কো জিমি ও ফিও জেয়া থাও, কিন্তু গত জুন মাসে সে আপিল খারিজ করে দেন আদালত।
তারপর গত ২৫ জুলাই মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থার এক প্রতিবেদনে চার গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।
মঙ্গলবার এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জান্তা মুখপাত্র জাও মিন তুন এই মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেন, ‘এ পর্যন্ত মিয়ানমারে যত মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, সেসবের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়— সেক্ষেত্রে এই অপরাধীদের একবার নয়, কয়েকবার ফাঁসি হওয়া উচিত।’
এছাড়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে দণ্ডিতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
জান্তা মুখপাত্রের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের সংবাদ সম্মেলনে নেড প্রাইস বলেন, ‘জান্তার সঙ্গে কখনও স্বাভাবিক সম্পর্ক থাকতে পারে না। আমরা বিশ্বের সব দেশকে অনুরোধ জানাব— মিয়ানমারে ক্ষমতাসীনদের যেন কোনো প্রকার ঋণ সুবিধা দেওয়া না হয় এবং তাদের কাছে যেন অস্ত্র বিক্রি না করা হয়।’
‘আমরা তাদের চাপে রাখার চেষ্টা করছি; এবং ভবিষ্যতে এই চাপ আরও বাড়বে।’ সূত্র: বিবিসি
এসকেএইচ//