করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী যেন শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। ব্যাপক টিকা কর্মসূচি আর হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের পরও নিত্য নতুন ধরন পাওয়া যাচ্ছে।
মহাসংক্রামক ধরন ওমিক্রনের পর এবার পাওয়া গেছে আরও একটি ধরন, যার সংক্রমণ ক্ষমতা অতীতের সবগুলোকে ছাড়িয়েছে।
করোনার নতুন উপজাত বিএফ.৭ ঘিরে উদ্বেগের মধ্যেই ভাইরাসের আরও এক নতুন রূপ এসে হাজির হয়েছে। করোনার প্রজাতি ওমিক্রন এক্সবিবি-র বংশধর এক্সবিবি.১.৫, যার ডাক নাম ‘ক্রাকেন’। এতে করে করোনা নিয়ে আবারো সবার আশঙ্কা বাড়ল।
২০২২ সালে করোনার এই নতুন রূপের প্রথম খোঁজ পাওয়া যায় আমেরিকাতে। এর পর থেকেই দ্রুত গতিতে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমানে আমেরিকা ছাড়াও আরও ২৮টি দেশে হানা দিয়েছে করোনার এই নতুন উপরূপ। পৌঁছে গেছে ভারতেও।
দেশটিতে সাত জনের শরীরে এই নতুন উপরূপের খোঁজ মিলেছে। কিছু আগেই ওমিক্রনের নতুন উপজাত নিয়ে তটস্থ হয়েছিলো ভারত। আবার ক্রাকেন প্রজাতি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে দেশটি। ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোতে নজরদারি কড়াকড়ি করা হয়েছে।
ক্রাকেন ধরন হল করোনা এক্সবিবি প্রজাতির জিনগতভাবে পরিবর্তিত রূপ। ভাইরোলজিস্টরা এই প্রজাতিকে এক্সবিবি.১.৫ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই প্রজাতিকে ওমিক্রনের এক্সবিবি উপরূপেরই নিকট আত্মীয় বলা যেতে পারে।
ওমিক্রনের BA.2.10.1 এবং BA.2.75 উপপ্রজাতির সঙ্গে এর অনেক মিল আছে। এই ধরনটি ৫৬ শতাংশ বেশি রোগ ছড়াতে পারে। বিএফ.৭ এর চেয়ে এর সংক্রমণের হার প্রায় ১২০ শতাংশ বেশি। আর সে কারণেই বেশি চিন্তা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
করোনা ভাইরাসের ক্রাকেন ধরন খুব তাড়াতাড়ি মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। মানুষের শরীরে এর সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবডিগুলোকে দুর্বল করে দিতে পারে, ফলে খুব সহজেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বয়স্কদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে আমেরিকায় করোনা সংক্রমণের ১ শতাংশ ছিল এই উপরূপের কারণে। বর্তমানে এই হার ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে এই উপরূপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ক্রাকেনকে ‘অত্যন্ত সংক্রামক উপরূপ’ বলে বর্ণনা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু অনেক দেশেই করোনা বিধি শিথিল করেছে এবং পরীক্ষা কমানো হয়েছে, ফলে নিঃশব্দে থাবা বসাতে পারে এই উপরূপ। ক্রাকেনের কারণে সংক্রমণের ভয়াবহতা তেমন নেই। অতীতে করোনার যেসব প্রজাতি পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে এটির খুব পার্থক্য নেই।
জাগরণ/বিশ্বস্বাস্থ্য/করোনাভাইরাস/ক্রাকেন/এসএসকে