কুমিল্লা মুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের আঞ্চলিক মহাসমাবেশ

কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম কুমিল্লা মুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের আঞ্চলিক মহাসমাবেশ
ছবি- জাগরণ।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ৫০ বছর এবং ৮ ই ডিসেম্বর কুমিল্লা মুক্ত দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আওতায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে  কুমিল্লা টাউন হলের বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তনে কুমিল্লা, ফেনি, চাদপুর সহ বিভিন্ন জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের আঞ্চলিক মহাসমাবেশ  কুৃমিলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে  র‍্যালি ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ দিয়ে সারাদিনের কর্মসূচী শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে ফেনী থেকে ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লা সদর ৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লা চান্দিনা ৭ আসনের সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডঃ পাণ গোপাল দত্ত, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ (পিপিএম বার), মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখী, কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল,ফেনী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ মোতালেব,ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা হোসেন প্রমূখ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমিল্লা সদর ৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আকম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখতেন বাঙালি জাতি একদিন বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।বঙ্গবন্ধুর সে স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ নিয়েছে। পাকিস্তান আমলে আমরা একজন সেনাবাহিনীর প্রধান তৈরি করতে পারিনি কিন্তু আজ জাতির পিতার বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের সেনাবাহিনী আজ জাতিসংঘসহ বিশ্বের দরবারে সুনামের সাথে ১ নম্বর স্থান দখল করে আছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আজ আমরা সবদিক থেকে এগিয়ে আছি।

তিনি বলেন, কুৃমিল্লা মুক্ত দিবসে আমি বলতে চাই, আমাদের কুমিল্লা আজ রেমিট্যান্স এর দিক থেকে ১ নম্বর, কৃষি ও মাছের চাষের দিক থেকে কুমিল্লা এগিয়ে। ৩০ লক্ষ মা বোনের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে।এখন যারা পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে জার্সি গায়ে দিয়ে তাদের খেলা দেখে তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। আমি মুক্তিযুদ্ধাদের এ সমাবেশ থেকে দাবি তুললাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যেন তাদের কাছে ফিরিয়ে দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা চান্দিনা ৭ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডঃ প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দুটি স্লোগান ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান হাতিয়ার- 'জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু' এ স্লোগান আমাদেরকে উজ্জীবিত করতো। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন বহুমাত্রিক দার্শনিক। তাঁর দূরদর্শিতার কারণে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।

বিশেষ অতিতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমার অকুন্ঠ শ্রদ্ধা ও সালাম। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। মুক্তিযোদ্ধাগণ দেশ স্বাধীন না করলে আজ আমি কুমিলার পুলিশ সুপার হতে পারতাম না। তাঁদের আত্মত্যাগের কথা আমরা যেন ভুলে না যাই। যে সকল মুক্তিযোদ্ধাগণ জীবিত আছেন, তাদেরকে আমাদের শ্রদ্ধাও সম্মান করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণে আজ আমরা স্বাধীন দেশের অধিবাসী। জাতির পিতার রেসকোর্স এর ৭ ই মার্চের ভাষণ আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। পাক হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের কারণে তিনি পিছ পা হননি বরং আমাদেরকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। আলোচনার পর কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন ও সঙ্গীত পরিবেশন  করেন। 
 

এসকেএইচ//