আক্কেলপুর(জয়পুরহাট) প্রতিনিধি//
আজ ১৩ ডিসেম্বর। আজকের এই দিনে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর হানাদার মুক্ত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পাক বাহিনী বিজয়ের তিন দিন আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে আক্কেলপুর ছেড়ে পলায়ন করে।
প্রতিবছর এ দিনটি ঘিরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আক্কেলপুর বাসী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতাকামীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার নবীবুর রাহমান জানান, আক্কেলপুর উপজেলায় পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। পাক সেনা বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিত ভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটসহ নির্বিচার হত্যাকান্ড চালায়। একাত্তরের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান পাক বাহীনির কবল থেকে দেশমুক্ত করার জন্য আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
পাক জান্তারা আক্কেলপুর রেলস্টেশন, সিনিয়র মাদ্রাসাসহ কয়েক জায়গায় ক্যাম্প তৈরি করে। ৯ মাসের যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনী আক্কেলপুরের হলহলিয়া ব্রীজ এলাকা থেকে জয়পুরহাট অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং যাচ্ছিল। এই খবর পেয়ে পশ্চিম দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি গেরিলা গ্রুপ একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিরোধ করে ১৩ ডিসেম্বর সকালে আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে।
পরে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে কয়েকটি গ্রুপ মিলে দূর্গা প্রসাদ আগরওয়ালার বাড়িতে তৎকালীন থানা ক্যাম্পে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ওই দিন চারজন পাক সেনা এবং আট জন রাজাকার নিহত হয়। অন্যান্য দালাল, রাজাকাররা আত্মগোপন করে। এ দিন বিকেলে আক্কেলপুরে প্রবেশ করেন শত শত মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন হয় আক্কেলপুর। উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজ পতাকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম হাবিবুল হাসান বলেন, আক্কেলপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে র্যালী, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এবারে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি ডকুমেন্টরী তৈরী করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরীটির শুভ উদ্বোধন করা হবে।
এসকেএইচ//