নারীদের পোশাকে পছন্দের শীর্ষে থাকে শাড়ির নাম। আর তা যদি হয় জামদানি শাড়ি, তবে তো কথাই নেই। অনেক নারী রয়েছেন যারা শখের খাতিরে নানা রঙের জামদানি শাড়ি কিনেন। যেকোনো উৎসব বলতেই জামদানি শাড়ি ছাড়া ভাবতেই পারেন না। যখনই জামদানিতে নতুনত্ব দেখেছেন তাদের চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছে। চটজলদি তা কিনেও নিচ্ছেন।
দেশের সব বয়সী নারীই কিন্তু জামদানির প্রতি আলাদা এক দেশীয় টান অনুভব করেন।সেই টান থেকেই জামদানি নিয়ে কাজ করেছেন কৃষিবিদ জাহানারা ইসলাম।
মসলিন কাপড়ের ওপর নানা রঙের নকশা করে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হয় জামদানি কাপড়। এর ওপর মূল্যবান জাফরান রঙ দিয়ে তৈরি করেছেন বিশেষ এক শাড়ি। অনেক যত্ন করে বিশেষ এই শাড়িটি তৈরি করা হয়েছে বিশেষ এক মানুষের জন্যে, জানালেন জাহানারা ইসলাম।
হ্যাঁ, বিশেষ এই মানুষটি হচ্ছেন দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাহানারা ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতেই জাফরান গাছ থেকে রং সংগ্রহ করে মসলিন শাড়িটি নিজের হাতে নিখুঁতভাবে তৈরি করেছেন। তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
শাড়িটি প্রসঙ্গে কৃষিবিদ জাহানারা ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে একটি শাড়ি উপহার দেবো এই স্বপ্নটা অনেক আগ থেকেই ছিল। ২০০৫ সাল থেকেই, আমি এই রকম একটা শাড়ি তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এই বছর শাড়িটি পুরোপুরি তৈরি করতে পেরেছি। সুযোগ হলে শাড়িটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।”
জাহানারা ইসলাম আরো বলেন, “আমি চাই এই শাড়ি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার মধ্য দিয়ে জামদানি শাড়ির হারানো ঐতিহ্য আবারও যেন ফিরে আসে।”
১৯৮০ সাল থেকেই ব্লু-ইকোনমি নিয়ে কাজ করছেন জাহানারা ইসলাম। কক্সবাজারের কলাতলীতে দীর্ঘদিন নিরাপদ কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি।
মুঘল আমল থেকে শুরু করে নেপালের আঞ্চলিক পোশাকেও জামদানি কাপড়ের ব্যবহার হতো। বর্তমানে এই জামদানিকে বিশ্ব দরবারে নতুনভাবে পরিচিত করতেই তার এই চেষ্টা। বিশ্ব বাজারে ফ্যাশন দুনিয়ায় জামদানিকে পৌঁছে দিতেই তিনি কাজ করতে চান।
জামদানি শাড়ি নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে জাহানারা ইসলাম আরো বলেন, “আমাদের জামদানি দিয়ে যাতে বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশকে চেনে, এটাই আমার মূল লক্ষ্য। এই জামদানিকে শিল্পের রূপ দিলে আশা করি দেশের বিশাল একটা কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”