ঝড় বা ঘূর্ণিঘড় এলেই সতর্ক সংকেত দেওয়া হয় সমুদ্রবন্দরে। সতর্ক সংকেত অনুযায়ী, উপকূলবর্তী স্থানগুলোতে নেওয়া হয় প্রস্তুতি। আবহাওয়া অধিদপ্তর সংখ্যা ধরে কয়েকটি সতর্ক সংকেত চিহ্নিত করে থাকে, যা বুঝিয়ে দেয় কেমন হবে ঝড়ের ধরন, কী হবে এর প্রস্তুতি।
সংকেতগুলো স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তাদের জন্য় বেশ পরিচিত হলেও সাধারণ মানুষ জানে না এর বার্তা কী হয়। সাধারণত ১ থেকে ১১টি সংকেত থাকে। যা পর্যায়ক্রমে সমুদ্রবন্দরের সতর্কতায় ব্যবহার করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত
১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেতে জানানো হয়, জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার থাকে। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত
২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেতে বলা হয়, গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত
৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতে বলা হয়, বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত
৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতে জানানো হয়, বন্দর ঘূর্ণিঝড়-কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় হয়নি।
৫ নম্বর বিপদ সংকেত
৫ নম্বর বিপদ সংকেতে বলা হয়, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৬ নম্বর বিপদ সংকেত
৬ নম্বর বিপদ সংকেত জানায়, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৭ নম্বর বিপদ সংকেত
৭ নম্বর বিপদ সংকেতে নির্দেশ করে, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় থাকবে ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতে বলা হয়, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাঁ দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতে বলা হয়, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতে জানানো হয়, বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে।
১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত
সবশেষ দেওয়া হয় ১১ নম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত। এতে বলা হয়, আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।