দেশজুড়ে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বেড়েছে বজ্রপাত। রাস্তায় আছেন, হঠাৎ বৃষ্টি নামল। কিছুক্ষণ পর দেখলেন বজ্রপাত হচ্ছে। তাৎক্ষণিক কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। সে জন্য় কিছু প্রস্তুতি আগে থেকেই রাখুন।
এর আগে জেনে নিই বজ্রপাত কেন হয়? মেঘে অবস্থিত বিদ্যুৎক্ষেত্র যখন যথেষ্ট শক্তিশালী হয় (প্রতি ইঞ্চিতে প্রায় ১০,০০০ ভোল্ট), তখন তার আশপাশের বাতাস পজিটিভ ও নেগেটিভ চার্জে বিভক্ত হয়। এই আয়নিত বাতাস প্লাজমা নামেও পরিচিত। বাতাস আয়নিত হয়ে মেঘ এবং ভূপৃষ্ঠের মধ্যে বিদ্যুৎ চলাচলের পথ বা শর্টসার্কিট তৈরি করে দেয় এবং বজ্রপাত ঘটায়। এবার জেনে নিই বজ্রপাতের আগে বা পরে যা করবেন_
বিদ্যুতের খুঁটি
বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পর্শের আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই গাছ বা খুঁটির কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় যাত্রীছাউনি বা বড় গাছে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে। সেখানেও আশ্রয় নেবেন না।
দালানের নিচে থাকুন
বজ্রপাতের সময় খোলা বা উঁচু জায়গায় না থেকে দালানের নিচে আশ্রয় নিন। ঘরের জানালার কাছে বা বারান্দায় গিয়ে বাইরে উঁকিঝুঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।
ধাতব পদার্থ থেকে দূরে থাকুন
বজ্রপাতের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ, জানালার গ্রিলসহ যেকোনো ধাতব পদার্থ সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। মোবাইল ও ল্যান্ডফোন ব্যবহার থেকেও বিরত থাকুন।
বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ রাখুন
ঝড় বা বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগগুলো বন্ধ রাখুন। সব ধরনের বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ঘরের টিভি, ফ্রিজও স্পর্শ করবেন না।
গাড়ি থামান
বজ্রপাতের সময় গাড়িতে থাকলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে থামিয়ে রাখুন। অপেক্ষা করুন বৃষ্টি কমে যাওয়া পর্যন্ত। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়, তাহলে গাড়ি কোনো গ্যারেজে বা পাকা ছাউনির নিচে রেখে দিন। গাড়ি থেকে নেমে নিরাপদ আশ্রয়ে যান। গাড়ির ভেতর অবস্থান করলে গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না।
বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন
প্রতিটি বাড়ি বা বিল্ডিংয়ে বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন। এতে বাড়ি নিরাপদে থাকবে।
দূরত্ব বজায় রাখুন
খোলা স্থানে অনেকে একসঙ্গে থাকলে ওই সময় বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যান। বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে থাকুন।
রাবারের জুতা পরুন
অতি জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে রাবারের জুতা পরুন। এটি বজ্রপাত থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
মাঠে বসে পড়ুন
বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
নদীতে যাবেন না
কালো মেঘ দেখলে বা বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখলেই নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় নৌকায় মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।