করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার পরে দেশদুনিয়া স্বাভাবিক হলে বেড়াতে যাবেন ভাবছেন? সঙ্গে প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা? সব জায়গায় খোলামেলা প্রেম প্রদর্শন করতে যাবেন না। বিপদে পড়তে পারেন। হালে অতি পরিচিত শব্দবন্ধ হল ‘পাবলিক ডিসপ্লে অব অ্যাফেকশন’ বা ‘পিডিএ’। বাংলায় যার মানে— খোলাখুলি প্রেম দেখানো। ইউরোপের বহু দেশেই এ নিয়ে বিশেষ ছুৎনার্গ নেই। আবার অন্য বহু দেশেই এ নিয়ে বেশ সমস্যা আছে। দেখে নেয়া যাক, কোথায় খোলাখুলি প্রেম দেখালে কী হবে? আনন্দবাজার অবলম্বনে গ্রন্থনা—মাওলা আলি
ইউরোপ
এই মহাদেশের বেশির ভাগ শহরে রাস্তাঘাটে চুম্বন মোটেই বড় কোনও ব্যাপার নয়। সকলের সংস্কৃতির মধ্যেই বিষয়টি রয়েছে। ফলে সমস্যা হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এ সবই শহুরে আদবকায়দা বা সংস্কৃতি। গোটা ইউরোপের গ্রামেই এই প্রেম প্রদর্শন নিয়ে বেশ চাপ রয়েছে। সেখানকার অনেকেই এ সব ভাল চোখে নেন না।
• হাত ধরা : কোনও অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : শহরে অসুবিধা নেই। গ্রামে মানুষ ব্যাঁকা চোখে তাকাতে পারেন।
• আদর : শহরে ঠিক আছে, গ্রামে কটুক্তি শুনতে হতে পারে।
রাশিয়া
এখানকার মানুষ তুলনায় রক্ষণশীল। একটু আধটু হাত ধরা বা চুম্বন চলতেই পারে। কিন্তু তার বেশি নয়। আর যদি সমলিঙ্গের যুগল হন, তা হলে তো কোনওভাবেই নয়। এ সব দেশে সমলিঙ্গের ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করাও বিপজ্জনক।
• হাত ধরা : চলতে পারে। সমলিঙ্গের হলে সমস্যার।
• চুম্বন : বেশিরভাগ মানুষ ব্যাঁকা চোখে দেখেন। সমলিঙ্গের ক্ষেত্রে একেবারেই নয়। আইনি জটিলতা হতে পারে।
• আদর : কেউ এসে দু’চার ঘা বসিয়ে দিয়ে যেতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়া
মোটের ওপর ইউরোপের সংস্কৃতিই এখানে অনুসরণ করা হয়। ফলে বিশেষ অসুবিধা হওয়ার নয়।
• হাত ধরা : অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : অসুবিধা নেই।
• আদর : বেশিরভাগের চোখেই বিষয়টা স্বাভাবিক।
কেনিয়া
এই মহাদেশের এক এক দেশে এক এক রকম অবস্থা। মিশরে প্রেম প্রদর্শন করলে কারাবাস হতে পারে। কেনিয়ায় আবার শুধু সমলিঙ্গের যুগলের জন্য একই শাস্তি হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবশ্য এ সব নিয়ে অত মাথাব্যথা নেই।
• হাত ধরা : পরিস্থিতি বুঝে।
• চুম্বন : দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া অন্য দেশে না করাই ভাল। আইন সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
• আদর : মোটেই ভাল চোখে দেখা হয় না বেশির ভাগ দেশে।
আমেরিকা
মোটের ওপর প্রেম প্রদর্শন নিয়ে বিশেষ বিধিনিষেধ নেই। তবে গ্রামের দিকে একটু ব্যাঁকা দৃষ্টি ধেয়ে আসতে পারে।
• হাত ধরা : কোনও অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : অসুবিধা নেই।
• আদর : শহরে অসুবিধা নেই। গ্রামে চারপাশ দেখে।
ব্রাজিল
গোটা পৃথিবীর মধ্যে প্রেম প্রদর্শনের জন্য সবচেয়ে সুখের মহাদেশ। ব্রাজিলে চুম্বনের প্রতিযোগিতাই হয়। সম্পূর্ণ অচেনা ৩০ জনকে চুম্বন করতে হয় এই প্রতিযোগিতায়।
• হাত ধরা : কোনও অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : চুটিয়ে করা যাবে।
• আদর : তাতেও অসুবিধা নেই। কেউ মাথা ঘামাবেন না।
কম্বোডিয়া
লাওস, কাম্বোডিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশে খোলাখুলি প্রেম দেখানো নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু এই দেশগুলির বেশ কিছু ক্লাব এবং ‘পার্টি-দ্বীপ’-এ তা চলতেই পারে।
• হাত ধরা : শহরে অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : শুধু বিশেষ বিশেষ জায়গায়।
• আদর : কিছু ক্লাব আর পার্টি দ্বীপে।
জাপান
আইনি সমস্যা নেই। কিন্তু জাপানের মতো দেশে প্রেম প্রদর্শনের বিষয়টিকে ‘নোংরা’ বলে ধরা হয়। অনেকটা যেমন সর্বসমক্ষে জোরে জোরে শব্দ করে ঢেকুর তোলা! এ সব দেশে প্রতি কোণে কোণে হোটেল রয়েছে। যারা ঘনিষ্ঠ হতে চান, সেখানে ঢুকে পড়া উচিত বলেই মত এ সব দেশের বহু মানুষের।
• হাত ধরা : বিশেষ অসুবিধা নেই।
• চুম্বন : ঘেন্নায় নাক সিটকাতে পারেন অনেকে।
• আদর : কেউ এসে হোটেলের দরজা দেখিয়ে দিতে পারেন।
সৌদি আরব
হাত ধরা চলতে পারে। কিন্তু বন্ধুদের মধ্যে। প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী খোলাখুলি প্রেম দেখাতে পারবেন না।
• হাত ধরা : শুধু বন্ধুদের মধ্যে চলতে পারে।
• চুম্বন : না।
• আদর : না।
ভারত
দেশের হোক বা বিদেশের নাগরিকদের খোলাখুলি প্রেম দেখানো মোটেই আইনস্বীকৃত নয়। জরিমানা বা কারাবাস হতে পারে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপালও প্রায় একই ধরনের নিয়ম।
• হাত ধরা : চলতে পারে।
• চুম্বন : বিধিনিষেধ রয়েছে।
• আদর : নিয়ম নেই।
পাকিস্তান
খোলাখুলি প্রেম দেখানোর ক্ষেত্রে বাধা নেই। কিন্তু তার আগে অনুমতি নিতে হবে।
• হাত ধরা : পুলিশকে আগে থেকে জিজ্ঞাসা করে।
• চুম্বন : পুলিশকে আগে থেকে জিজ্ঞাসা করে।
• আদর : পুলিশকে আগে থেকে জিজ্ঞাসা করে।
জাগরণ/এসএসকে/এমএ