‘পলি দিয়ে গঠিত বাংলাদেশ, তাই দেশটা উর্বর’, উর্বরতার এই ধারণাটিকে প্রশ্নের মাঝে ফেলেছিলেন একজন ভূগোলবিদ। এই ধারণাটা যদি ভুল হয়ে থাকে, তবে আমাদের প্রকৃতি, জলবায়ু ও কৃষির দিকে, সামগ্রিক অর্থে নিজেদের দিকেই নতুন করে তাকাতে আমরা বাধ্য হই। চিন্তার এই আলোড়নটা এনেছিলেন হিউ ব্রামার। অনেকটা নীরবেই চলে গেলেন তিনি গত ১৩ জানুয়ারি, ৯৫ বছর বয়সে। জীবনটা তাঁর দীর্ঘ ছিল সত্যি, কিন্তু যে কর্মক্ষমতা আর উদ্দীপনা নিয়ে তিনি বিচরণ করছিলেন ওই বয়সেও, তাতে তাঁর নিকটবর্তী মানুষদের দেখেছি শোকের সাথে ক্ষতির অনুভবও করছেন সমান পরিমাণে: হিউ ব্রামারের যা কিছু দেয়ার ছিল, তা তিনি সুসম্পূর্ণ করতে পারেননি।
তাঁর মৃত্যুর তিন দিন পর ডেইলি স্টারে একটা শোকগাঁথা পেলাম বিআইডিএস-এর সাবেক গবেষণা পরিচালক এম আসাদুজ্জামানের। আর জীবিতাবস্থায় তাঁকে নিয়ে সম্ভবত একটাই প্রতিবেদন হয়েছিল বাংলাদেশের গণমাধ্যমে, সেটা প্রথম আলোতে ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর, লিখেছিলেন রানা আব্বাস। সেই সাক্ষাতকারভিত্তিক তথ্যবহুল লেখাটিতে, হিউ ব্রামার কিভাবে বাংলাদেশে এলেন, গবেষণায় যুক্ত হলেন এবং শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএল কিভাবে তাঁর গবেষণালদ্ধ বিপুল সংগ্রহশালার একাংশ গ্রন্থাকারে প্রকাশ করলো, সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা মিলবে। বর্তমান নিবন্ধেও সেই বিষয়ে দুয়েকটি কথা বলেই ব্রামার কেন গুরুত্বপূর্ণ, সেই আলাপে আমরা যাওয়ার চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশের ভূগোল, পরিবেশ, মাটি, কৃষি, গ্রামীণ অর্থনীতি এবং নগরায়ন নিয়ে হিউ ব্রামার যে পরিমাণ কাজ করেছেন, সেটা পরিমাণ ও মান উভয় দিক দিয়েই অবিশ্বাস্য বিপুল। সহকর্মীরা কেউ কেউ যে তাকে বিশ্বকোষ নামে অভিহিত করেছেন, তা অযাথার্থ নয়। একালের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যার শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে ঋণী, প্রত্যক্ষভাবে ঋণী কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে যারা কাজ করেন তারাও। এত বিপুল প্রভাব সত্ত্বেও এবং তথ্যউপাত্তের প্রয়োজনে বারবার তাঁর কাছে ফিরতে হলেও, তাঁর সিদ্ধান্তমূলক বহু উপলদ্ধির কারণে ব্রামারের সিদ্ধান্তগুলোর উল্লেখ বাংলাদেশে প্রায় বিরল; সেটার কারণ সম্পর্কে পরে খানিকটা আভাস দেয়া যাবে। চাকরি সূত্রে বাংলাদেশে এসেছিলেন ১৯৬১ সালে, ১৯৭১ সালে ফিরতে বাধ্য হয়েছিলেন রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের সময়টাতে। ১৯৭৪ সালে বিশ্বখাদ্য সংস্থা তাঁকে আবারও বাংলাদেশে পাঠায়। এই দফায় তিনি বাংলাদেশে থাকেন ১৩ বছর। এই দেশের বিভিন্ন স্থানের মাটি, পানি ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জরিপের আধুনিক আমলের ইতিহাস তাঁর সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বাংলাদেশের মাটির বৈচিত্র্য সমন্ধীয় মানচিত্রটি তার হাতেই তৈরি। একদল প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনীও তিনি তৈরি করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে তাঁর গবেষণা কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রাষ্ট্রপতি পদক পান হিউ ব্রামার। ১৯৯২ সালে তাঁর আনুষ্ঠানিক কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে, আর ইউপিএলের প্রতিষ্ঠাতা মহিউদ্দীন আহমেদের সাথে যোগসূত্রে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘দ্য জিওগ্রাফি অব দ্য সয়েলস অব বাংলাদেশ’ , ১৯৯৬ সালে। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি প্রধানত বাংলাদেশকে নিয়েই কাজ করেছেন, বিপুল তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলেছেন, সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে একের পর এক লিখেছেন ১০টি মৌলিক গ্রন্থ এবং গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন অজস্র জার্নালে।
২
২০১৬ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘বাংলাদেশ: ল্যান্ডস্কেপস, সয়েল ফার্টালিটি অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ গ্রন্থের ভূমিকাতেই ব্রামার কেন এই বইটি লিখেছেন তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই বলে যে, বাংলাদেশের ভৌগোলিক জলবায়ু বিষয়ক একটি গ্রন্থ পাঠ করতে গিয়ে যে অতিকথন ও ভুল ধারণাগুলোকে তিনি চল্লিশ বছর ধরে শোধরাবার চেষ্টা করেছেন, সেই ভ্রান্তিগুলোকেই পুনরাবৃত্ত হতে দেখে তিনি এই গ্রন্থটি রচনায় হাত দিয়েছেন। এই অতিকথনগুলো মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখ্য হলো বাংলাদেশের মাটির উর্বরতা বাৎসরিক পলিবাহী বন্যার কাছে ঋণী। বইটির যথাস্থানে তিনি নিজের মতটিও প্রকাশ করেছেন এই বিষয়ে : “বাংলাদেশের প্লাবনভূমির বিখ্যাত উর্বরতা বাৎসরিক বন্যায় নিয়মিত যুক্ত হওয়া পলির কারণে না, যদিও জনপ্রিয় বিশ্বাস সেটাই। নদীর তরতাজা পলিতে কেবল যে শুধু জৈব উপদান এবং অন্যান্য সহজপ্রাপ্য খনিজ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি আছে তাই নয়, বরং অধিকাংশ নদীবিধৌত সমভূমি অঞ্চল পলিযুক্ত নদীর পানি দ্বারা প্লাবিত হয়ও না... সেগুলো প্লাবিত হয় বৃষ্টির পানি ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে“ (পৃষ্ঠা ৬৮)। এরপরই ব্রামার বাংলার এই উর্বরতার আরও কিছু উৎসের পাশাপাশি বর্ণনা করেন এদেশের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে অজস্র জন্মানো সবুজ জলজ শ্যাওলার ভূমিকা, এটিও ‘পলিযুক্ত নদীর ঘোলা পানির চাইতে বৃষ্টির জলেই বেশি জন্মায়’, কারণ সেখানে শ্যাওলা সরাসরি সূর্যের আলো বেশি পরিমাণে গ্রহণ করতে পারে। জমির উর্বরতা রক্ষার জন্য ব্রামার এই আর্দ্র জলবায়ুর ভূমিকাতেই গুরুত্বারোপ করেছেন, বহুবার তার আলোচনায় বিস্তৃতভাবে তিনি জৈবসার তৈরি ও ব্যবহারে দক্ষতাবৃদ্ধির ওপর, জমিতে মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেন ব্যবহার এবং ফসফরাস ও পটাশিয়ামের ক্রমহ্রাসমানতার দিকে নজর না দেয়ার বিপদ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এই প্রসঙ্গে আমরা মনে না করে পারি না যে, বাংলাদেশের ২০২০ সালে সারে সরকারী ভর্তুকি ছিল প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। গত এক যুগে ৭৪ হাজার কোটি টাকা সারে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে! সরকারের দিক থেকে এই ভর্তুকিকে সাফল্য হিসেবেই দেখানো হলেও এই নীতিটি শুধু দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপচয়মূলক নয়, পরিবেশেরও বিপুল ক্ষতিসাধণ করছে এটা। বাংলাদেশে যদি কোনদিন সার, সেচ বিষয়ে কোন বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা ও জরিপের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রীয়নীতি নির্ধারিত হয়, ব্রামারের গবেষণা তাতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। আর্সেনিকের বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা পেতেও ব্রামার ধান চাষের ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও সেচের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে আনবার প্রযুক্তিগুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এই সব বিষয়ে তাঁর খুঁটিনাটি নজর এত তীক্ষ্ম ছিল যে, ১৯৮৯ সালে সেচের অভাবে পাটের ফলন হ্রাসের মত আঞ্চলিক বিষয় নিয়েও গভীরভাবে অনুসন্ধান চালিয়েছেন, কেন পাটের আবাদে সেচ দিলে তা পরবর্তী ফসলগুলোর জন্যও ইতিবাচক হবে, জমির সামগ্রিক উর্বরতার জন্যই ভালো হবে বলে নীতিনির্ধারকদের তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত, এই মর্মে সুপারিশ করেছেন।
সামগ্রিকভাবে কৃষির দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর ব্রামার এত গুরুত্বারোপ করেছেন যে, তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থের শেষ পাদটীকায় তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে এটা যথেষ্টমাত্রায় উপলদ্ধিতে নেই যে, বাংলাদেশের যে কোন জায়গাতে সেচ বা অন্যান্য ব্যবহারের জন্য আহরিত পানি—এই পানির মাঝে ভূগর্ভস্থ জলও অন্তর্ভূক্ত—উপকূলভাগ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারা পানির পরিমাণকে কমিয়ে ফেলে এবং এভাবে সমুদ্রের লবনাক্ত পানি স্থলভাগের আরও ভেতরে ঢুকে পড়াটাকে সম্ভব করে তোলে।” একইভাবে অবশ্য ব্রামার সমুদ্রের নোনা পানির এই আগ্রাসনের পেছনে ফারাক্কা বাঁধের ভূমিকার কথাও যথাস্থানে আলোচনায় এনেছেন।
৩
ব্রামার তাঁর গ্রন্থে আরও অনেকগুলো সরল সিদ্ধান্তকে প্রশ্নের মাঝে ফেলেছেন। এর মাঝে কয়েকটি ভূগোলবিদদের বিতর্কের বিষয়, সেখানে বাইরের মানুষদের ভূমিকা রাখবার তেমন কিছু নেই। কিন্তু কয়েকটি সিদ্ধান্তের গুরুতর তাৎপর্য আছে, সেগুলো রীতিমত রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনীতিগত উন্নয়ন কর্মসূচি এবং এমনকি বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তর্জাতিক নানান তৎপরতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। ব্রামারের মত একজন প্রথম ও প্রধান বিশেষজ্ঞ যখন এই বিষয়গুলো তোলেন, তখন সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া একদমই অন্যায় কাজ।
ব্রামার জলবায়ু পরিবর্তন বা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধিকে অস্বীকার করেন না, তবে বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার বলেও মনে করেন না। তাঁর মতে, বাংলাদেশের বহু উপকূলবর্তী এলাকায় যেমন পলিসঞ্চয়ের মাত্রা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধিকে ভারসাম্যে আনবে, নিমজ্জনের ঝুঁকি আছে এমন অঞ্চলগুলোতে অতিরিক্ত পলি পাঠানোর সুপারিশও তিনি করেছেন। কিন্তু এই সব কিছুই বিপুল গবেষণা, সূক্ষ্ম যাচাই-বাছাই এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজ। এই গবেষণার ওপর ব্রামার বারংবার গুরুত্বারোপ করেছেন। তাঁর লেখা পড়লে মনে হবে জলবায়ূ পরিবর্তন বা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধিকে বাংলাদেশের জন্য তিনি অন্তত সমাধানযোগ্য সঙ্কট বলে মনে করেন, অন্যদিকে ‘বাংলাদেশ ডুবে যাবে’ জাতীয় আতঙ্ক ছড়ানো হতাশাবাদী জলবায়ু-বণিকরা ঠিক বিপরীতটাই মনে করেন। রিমেমবার ডট কমে উন্নয়ন অধ্যয়ন গবেষক টেরি ক্যানন তাঁর স্মরণে যেমনটা পরিষ্কার করেই বলেছেন, ব্রামার মনে করতেন যে বাংলাদেশের বহুদিন ধরে চলে আসা ভুল নীতির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়াগুলো গভীরতর হবে, কিন্তু “তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে এখন পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাবের নিদর্শন সামান্যই দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বয়ান যাদের কাছে একটা নৈতিক অবস্থান অথবা একটি আর্থিক সুবিধার বিষয়, তেমন অধিকাংশ বাংলাদেশীর (এবং বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকের) কাছে তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিটি (যা তাঁর গবেষণালদ্ধ উপাত্ত দ্বারা সমর্থিত) তাঁকে জনপ্রিয় করেনি... অনেকেই বুঝতে পারেন না: কিন্তু তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ‘অস্বীকারকারী’ ছিলেন না, প্রতিপাদন করা যায় না এমন কাল্পনিক সমস্যার বদলে তিনি শুধু বিজ্ঞানের পক্ষে যুক্তি হাজির করেছেন।”
৪.
পাঠের আনন্দের দিক থেকেও ব্রামার ভূগোলকে একটা আনন্দময় অভিজ্ঞতায় পরিণত করেন। বাংলাদেশের নদী ও ভূমির সম্পর্ক কত জটিল ও স্পর্শকাতর, এবং রাষ্ট্রীয় সীমানার বাইরের ভৌগোলিক ঘটনাও তাকে কত গভীরভাবে এবং কতকাল জুড়ে প্রভাবিত করে, ব্রামারের বাংলাদেশের ভূগোল বিষয়ক গ্রন্থগুলোতে সেটার অজস্র উদাহরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যেমন ১৯৫০ সালের আসাম ভূমিকম্প, এর ফলে বিপুল পরিমাণ পলি তৎক্ষণাৎ ব্রহ্মপুত্র নদীতে চলে আসে। এই পলির সূক্ষ্ম ও হালকা অংশগুলো দ্রুতই মেঘনার মোহনাতে পৌঁছে গিয়ে চর গঠন করে। কিন্তু মোটা বালুর দানাগুলো নদীর ভাটিতে খুব ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয়, প্রায় ৫০ বছর সময় নিয়ে সেগুলো মোহনাতে পৌঁছে। সে কারণে ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৭ সালের মাঝে মেঘনা মোহনাতে ২০ কিলোমিটার নতুন ভূমির গঠন হয়। এই গড়নের প্রক্রিয়াতেই আবার চর পড়ে নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে ভোলার উত্তর-পূর্বভাগ ও হাতিয়ার উত্তরভাগ ভাঙনের সম্মুখীন হয়, সন্দ্বীপের উত্তরে নতুন জমি জেগে ওঠে।
প্রতিবেশগতভাবে এত স্পর্শকাতর হবার কারণেই বৈচিত্র ও সামষ্টিকতার বিপুল ঐক্যের উপলদ্ধি বাংলাদেশের যে কোন উন্নয়ননীতি নির্ধারণে অত্যাবশ্যক, আবশ্যক ভিন্ন চিন্তাগুলোকেও আমলে নেয়ার, এবং অবকাঠামো ও উন্নয়ন বাণিজ্য যেন নীতিনির্ধারণে প্রাধান্য বিস্তার না করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা। আর এই সব কিছুর ন্যূনতম উপলদ্ধির জন্য বাংলাদেশের ভূগোল নিয়ে সম্যক একটা পাঠ যে কোন সচেতন মানুষের জন্য প্রয়োজন। সেই আকূলতা থেকে ব্রামার চেয়েছিলেন তাঁর বইগুলোর, অন্তত ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ: ল্যান্ডস্কেপ, সয়েল ফার্টিলিটি অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ গ্রন্থটি বাংলায় অনূদিত হোক। এটা আমাদের জন্য শোকের যে, সেই অনুবাদটি তিনি দেখে যেতে পারেননি। ব্রামারের সকল সিদ্ধান্তের সাথে একমত হবার কোন প্রয়োজন নেই, কিন্তু তাঁর অনুসন্ধান-লব্ধ জমা করা বিপুল তথ্য-উপাত্ত পরবর্তী প্রজন্মের গবেষকদের কাজের জন্য একত্রিত করা, সহজলভ্য করা এবং যথাসম্ভব বাংলায় অনুবাদ করাটা জাতি হিসেবে তাঁর প্রতি আমাদের ঋণটুকু শোধ করবার দায়ের মাঝে পড়ে।
নীচে ব্রামারের গ্রন্থসমূহের তালিকা দেয়া হলো, এই তালিকায় থাকা শিরোনাম দেখেই বোঝা যায় তাঁর কাজের বিপুলতা ও বৈচিত্র্য।
2016: Bangladesh: landscapes, soil fertility and climate change
2014: Climate change, sea-level rise and development in Bangladesh
2012: The physical geography of Bangladesh
2004: Can Bangladesh be protected from floods?
2002: How to help small farmers in Bangladesh
2002: Land use and land use planning in Bangladesh
2000: Agroecological aspects of agricultural research in Bangladesh
1999: Agricultural disaster management in Bangladesh
1997: Agricultural development possibilities in Bangladesh
1996: The geography of the soils of Bangladesh