আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৫ মে)। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের (তৎকালীন অবিভক্ত বাংলা) বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নজরুল। তাঁর বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।
নজরুল বাংলা সাহিত্যের এক বিস্ময়ের নাম। বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন মধ্য গগনে প্রবল প্রভাব বিস্তার করে চলছেন, তখন বিপুল আলোড়ন তুলে আবির্ভাব নজরুলের। রবীন্দ্রপ্রভাবিত যুগেও নিজস্ব একটি ধারা সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন নজরুল।
বাংলা কবিতা ও গানে এক নতুন যুগের সূচনা হয় নজরুলের হাত ধরে। একদিকে প্রেম, অন্যদিকে বিদ্রোহ নিয়ে নজরুল বাংলা সাহিত্যকে করে তোলেন সমৃদ্ধ। তার বিখ্যাত বিদ্রোহী কবিতা তর্কসাপেক্ষে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী কবিতা। সেই কবিতায় কবি বলেছেন, ‘মম একহাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণ তূর্য।’
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার লেখনী ধূমকেতুর মতো আঘাত হেনে ভারতবাসীকে জাগিয়ে দিয়েছিল। তিনি পরিণত হন বিদ্রোহী কবিতে। সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার, বৈষম্য, শোষণ ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে অগ্নিকণ্ঠে সোচ্চার হয়ে কবি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গান।
নজরুল একাধারে ছিলেন কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, শিশুসাহিত্যিক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার, স্বরলিপিকার, গীতিনাট্যকার, গীতালেখ্য রচয়িতা, চলচ্চিত্র কাহিনিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, সংগীত পরিচালক, গায়ক, বাদক, সংগীতজ্ঞ ও অভিনেতা।
নজরুল সৃষ্টিকর্মের মধ্যে রয়েছে ২২টি কাব্যগ্রন্থ, সাড়ে ৩ হাজার, মতান্তরে ৭ হাজার গানসহ ১৪টি সংগীতগ্রন্থ, ৩টি কাব্যানুবাদ ও ৩টি উপন্যাসগ্রন্থ, ৩টি নাটক, ৩টি গল্পগ্রন্থ, ৫টি প্রবন্ধ, ২টি কিশোর নাটিকা, ২টি কিশোর কাব্য, ৭টি চলচ্চিত্র কাহিনিসহ অসংখ্য কালজয়ী রচনা।