//মৃত্যুই পরম সখা//
দিগন্ত বলে কিছু নেই;
মেঘ আর মাঠের একাকার হয়ে
মিশে যাওয়া নিছক কল্পনার ফানুস
আসলে সবই অবিমিশ্র কেবলই ধুম্রজাল,
মৃত্যু গভীর ঘুমের এক নিমগ্ন আত্মগ্রাস
স্নিগ্ধ আলো এবং প্রবহমান স্রোতধারা
মৃত্যু খুবই অনিন্দ অতি মনোহর;
চঞ্চল প্রজাপতি যেমন প্রষ্ফুটিত পুষ্প
রেণুর মধ্যবিন্দুতে অনাবিল আনন্দে
মধুভক্ষণ করে- বিচিত্র বর্নিল বিহঙ্গেরা
যেমন চিত্ত উতলা করে, মৃত্যুও তেমনি
অপূর্ব সুন্দর; সব বিতর্কের পরিসমাপ্তি
ঘটায় অসম্ভব নিখুঁত একটি
চিত্রকর্মের কারুকার্যমণ্ডিত নিপুণতায়,
মৃত্যু সদাই আবর্তিত করে নিজেকে
আপন সত্তার পরিমণ্ডলে; বৃক্ষের
শাখাপুঞ্জকে অনাবৃত করে নতুন পত্রের
পুনস্থাপনের একান্ত প্রয়োজনে।
বিশ্বকে সচল রাখার প্রতিশ্রুত ধারা
অব্যাহত রাখে আপন প্রশস্ততার ঔদার্যে।।
//সমুদ্রে যাইনি মধুচন্দ্রিমায়//
আমরা সমুদ্রে যাইনি মধুচন্দ্রিমায়
তবুও আমাদের মধ্যে
সমুদ্র জাগে
প্রতিরাতে গভীর প্রহরে
কিভাবে ধেয়ে আসে আমাদের শয্যায়
উদ্ধত সমুদ্র,
জ্যোৎস্না কেমন ক্ষ্যাপাটে করে দেয়
শরীরের চেকনাই খুলে খুলে
আলোরা খেলতে থাকে
রাতের নির্যাস চুঁয়ে চুঁয়ে
দু'জনের শয্যায় কতকিছু ঢলে পড়ে
কখনও মেঘ হাওয়া- আধভাঙা ডালিমের
জমাট লালী-
কখনও ফেনীল ফেনা
আবার কখনও মিথুনরত নগ্ন মথ।
আমরা কৃষ্ণঘন অরণ্যে ঘুরে ফিরি উন্মাতাল
ছিপের ফাৎনা নাড়াই
নৌকোর ছৈয়ে উঠে উলোট-পালট খেলি
শামুক-শাপলা গেঁথে
জড়াই বেণীর লতায়;
অবশেষে রক্ত তরঙ্গ স্মিত হয়ে এলে
বেলুনের মতো চুপসে যাই।।
//পাখা মেলেছি নভোনীলে//
যেখানে অনেক ঋতু খেলে গেছে
চোখের ইংগিতে- কথার নানান রসবোধে
শব্দের বহুবিধ পঙ্কিতে আসলে কোনো
সৃষ্টিই পূর্ণতা পায়নি; হয়তো কখনও
পেরিয়ে যাচ্ছি ক্রমেই শ্যামল প্রান্তর
পেছনে পড়ে থাকছে ক্লান্ত ম্রিয়মাণ
গোধুলির রক্তপিণ্ডের তেজহীন সূর্য;
গৃহের বৃক্ষাচ্ছাদিত ছাদের ডাল-পালায়
সন্ধার ফিরে আসা বিহঙ্গেরা জমা হচ্ছে
নিত্যদিনের সহজাত রাত্রির আশ্রয়ে;
এখন উড়ালের উপযুক্ত সময় এসেছে
নির্ভয়ে পাখা মেলেছি অনন্তনীলে।।
জাগরণ/এসকেএইচ