ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আধুনিক মানের আরো ৬টি নতুন কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। একই সঙ্গে পুরনো ৪টি কমিউনিটি সেন্টার সংস্কার করা হচ্ছে। পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি সেন্টারগুলোকে ভেঙে নতুনভাবে ১০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। মোট ১০টি ভবনের নির্মাণ ও সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৪৮৫ কোটি টাকা। এজন্য একটি বাজেট প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠনো হয়েছে বলে জানিয়েছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এসব ভবনে কমিউনিটি সেন্টারসহ কাউন্সিলরদের কার্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির সমাজকল্যাণ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অবিভক্ত ডিসিসি স্বল্প ব্যয়ে নগরবাসীর সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে, গায়ে হলুদ, জন্মদিন ইত্যাদি আয়োজনে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। ওই সময়ের কমিউনিটি সেন্টারগুলো চলমান থাকলেও অধিকাংশই জরাজীর্ণ। তিনি বলেন, কয়েকটি কমিউনিটি সেন্টার পুলিশের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহারিত হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুগদাপাড়া আফির উদ্দীন কমিউনিটি সেন্টারটি। সেই ভবন এখন আর কেউ সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করে না। ৪তলাবিশিষ্ট ওই ভবনের নিচতলায় কমিউনিটি সেন্টার ও সামনে মুগদা থানার জব্দ করা গাড়ি রাখার স্থান। এছাড়া দোতলা, তিন তলায় মুগদা থানার কার্যালয় ও চতুর্থ তলায় কাউন্সিলরের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ধানমণ্ডি কমিউনিটি সেন্টারটি দোতলা ভবন। এর দোতলা থানা ও নিচতলায় কাউন্সিলরের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দারা বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে।
ডিএসসিসি নগরবাসীর সুবিধার কথা চিন্তা করে নতুনভাবে দৃষ্টিনন্দন করে কমিউনিটি সেন্টার করার পরিকল্পনা হতে নিয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, নগরবাসীর সুবিধার্থে ডিএসসিসি স্বল্প ব্যয়ে সামাজিক অনুষ্ঠান পালনে নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে ও নাগরিকদের নানা সুবিধা একইস্থান থেকে দিতে নতুন করে ১০তলা বিশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের জন্য প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। নতুন যেসব কমিউনিটি সেন্টার নির্মিত হবে। সে স্থানগুলো হচ্ছে- ধানমণ্ডি ভূতের গলির কমিউনিটি সেন্টার, মুগদাপাড়া আফির উদ্দীন কমিউনিটি সেন্টার, রাজধানী সুপার মার্কেটের সঙ্গে কাবলী তলায় মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ কমিউনিটি সেন্টার, একতা মার্কেট কমিউনিটি সেন্টার, নিউমার্কেট থানাধীন শহীদ লেফটেন্যান্ট কমোডর মোয়াজ্জেম হোসেন কমিউনিটি সেন্টার ও কমপ্লেক্স। এছাড়াও সেগুনবাগিচা কমিউনিটি সেন্টার, ২৯ নং ওয়াডের্র ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টার, ৪৯ নং ওয়াডের্র গোলাপবাগ মাঠ লাগোয়া ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার, ৫০ নং ওয়াডের্র দক্ষিণ যাত্রাবাড়ি চন্দনকোঠার যাত্রাবাড়ি কমিউনিটি সেন্টারসহ মোট ৪টি কমিউনিটি সেন্টার দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ লিফট,গ্যাস সংযোগ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন কমিউনিটি সেন্টারে যে সব সুবিধা থাকছেঃ
নতুন নির্মিত ১০ তলা প্রতিটি ভবনে কার পার্কিং সুবিধা, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিস স্থাপন, থিয়েটার হল, কমিউনিটি হেলথ ফেসিলিটিজ নারী-পুরুষের আলাদা ব্যায়ামাগার, কমিউনিটি সার্ভিস বা ইনফরমেশন সার্ভিস, লাইব্রেরি, জিমনেসিয়াম, ইনডোর গেম ব্যবস্থা সংযোজন, কিডস সেন্টার, চাকরিজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ আধুনিক সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে। আর প্রস্তাবিত সেগুনবাগিচা কমিউনিটি সেন্টার পাঁচ তলায় লিফট ও গ্যাস লাইন সংযোগ ও আনুষঙ্গিক মেরামত করা হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি সেন্টারগুলো ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ কাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। পুরনো এবং ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় বর্তমানে অনেক কমিনিইট সেন্টার বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে এসব কমিউনিটি সেন্টার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এলাকাবাসী এগুলো ব্যবহারে আগ্রহ দেখায় না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ৬টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের ও আরও ৪ টি কমিউনিটি সেন্টারকে আধুনিক সুবিধা সংবলিত প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রতিটি ভবনকে ১০ তলার আধুনিক সুবিধাসসহ ভবন হিসেবে নির্মিত হবে। অর্থ বরাদ্ধ পাওয়া সাপেক্ষে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ করা হবে।
টিএইচ/টিএফ