দুই দিনের অভিযানেই সারাদেশে এডিস মশার চারণভূমি ধ্বংস করা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন পরিবেশবাদিরা। তারা বলেন, একাধিক মনিটরিং টিম রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত এই কার্যক্রম নিবিড় ভাবে পরিচর্যা করবে। একই সঙ্গে তারা বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের টিকা বা ভ্যাকসিন আবিস্কারের গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আর এজন্য একটি একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও গাইড লাইন অনুযায়ী এটি প্রণীত হতে পারে বলে তারা মত দিয়েছেন। জাতীয় কর্ম পরিকল্পনায় সকল স্তরের জনপ্রতিনিধি, সকল স্তরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যুক্ত করতে হবে।
‘দেশব্যাপী ডেঙ্গুর বিস্তার: জাতীয় কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় পরিবেশবাদিরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)মিলনায়তনে, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, গ্রীণ ফোর্স, বানিপা, বিসিএইচআরডি যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভায় পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান সভাপতিত্ব করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গাউস পিয়ারী, পরিচালক ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, সম্পাদক পবা মেসবাহউদ্দিন আহমেদ সুমন, গ্রীণ ফোর্স কবি কামরুজ্জামান ভ’ইয়া, প্রকৌ: মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলন মাহাবুবুল হক, বিসিএইচআরডি মো: মুসা খান রানা পবা গাজীপুর, মো: আকরাম হোসেন, পবা গাজিপুর। এছাড়াও গ্রীন ফোর্সের মো: রকিবুল ইসলাম (পাপ্পু), লাইবা জান্নাত, নূরজাহান জৈষ্টী, জান্নাতুল ইয়াসমিন সংগীতা, আহসান হাবিব প্রমুখ।
আবু নাসের খান বলেন, ডেঙ্গুর দিন দিন যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা জরুরি। দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয় ২০০০ সালের দিকে। শুরু সময় থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রধানত ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ ছিলো। সে সময় ঢাকায় এডিস মশার প্রজনন স্থল পুরোপুরি ধ্বংস করা গেলে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করে রোগটিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। এখন প্রশ্ন উঠেছে রাজধানী থেকে সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার দায় কার? কার/কাদের দায়িত্ব অবহেলার দরুন দেশ আজ একটি ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে? দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে কি?
ডা. লেলিন চৌধূরী বলেন, দেশব্যাপী ডেঙ্গুজ্বরের বিস্তার ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা মোট ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছে। এরমাঝে জানা গিয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দুই ঢাকায় মশা মারার জন্য যে ঔষধ ছিটিয়ে আসছিলো তা মশার বিরুদ্ধে কার্যকর নয়। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে সর্ব্বোচ গুরুত্ব প্রদান করা এখন সময়ের প্রধান দাবি।
সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুসারে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন স্থল ধ্বংশে ব্যক্তির পাশাপাশি সংস্থাগুলোর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা সম্ভব। সিটি কর্পোরেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত প্রথমে সকল নাগরিকদের এবং ওয়ার্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিজ নিজ আওতাধীন এলাকায় ডেঙ্গু মশা উৎপাদনের স্থান পরিষ্কারের নির্দেশ প্রদান এবং একটি মনিটরিং সেল স্থাপন করা যেখানে নাগরিক ডেঙ্গু মশা উৎপাদনের স্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবে।
টিএস/বিএস