স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের ‘অতি কথন’ নিয়ে সরকারের ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজের চেয়ে তারা কথাই যেন বেশি বলছেন। কখনো কখনো আবোল-তাবোলও বকছেন। দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সরকারকে বিতর্কিত করছেন তারা।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) সকালে ক্ষোভও ঝেড়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি তাদের কথার চেয়ে কাজে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঢাকা মেডিকেলে একটি অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মতো বাড়ছে এডিস মশা। মশা মারা আমাদের (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) কাজ না।’
ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরুর প্রথম থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে যে সময় অভিভাবকরা দিগ্বিদিক হয়ে ছুটছেন হাসপাতালে, সেই সময় থেকেই নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে চলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। গতকালও নগরবাসীর মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করার এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেন ‘ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আর ছেলে ধরা নিয়ে গুজব চলছে।’
শুধু তাই নয়, রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দুই সিটি করপোরেশনের চলছিলো লুকোচুড়ি। গণমাধ্যমে আক্রান্ত এবং মৃতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং দক্ষিণের মেয়র।
অথচ দক্ষিণের মেয়রের ভাবটি এমন, যেন ডেঙ্গুর বিস্তৃতি নিয়ে রাতে তার ঘুমই হচ্ছে না। তাই সকালেই বেড়িয়ে পড়ছেন সড়কে। তা করছেনও ঠিকই, তবে তা শুধু মশক নিধনে নয়, ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে। সচেতনতার নামে চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের প্রচারণাও।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের কাজের চেয়ে ‘অতি কথন’ নিয়ে সরকারের ভেতরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজের চেয়ে তারা কথাই যেন বেশি বলে চলেছেন। ‘মশা মারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের মত বাড়ছে এডিস মশা’ স্বাস্থ্য মন্ত্রীর এমন বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি দৈনিক জাগরণকে বলেছেন, ‘জানি না, কি-প্রেক্ষিতে তিনি (স্বাস্থ্য মন্ত্রী) এসব কথা বলেছেন। তবে এসব বক্তব্য তার নিজের ব্যক্তিগত।’ রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং দক্ষিণের মেয়রকে কথার চেয়ে কাজে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন সেতুমন্ত্রী। এছাড়া দলের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে সংযতভাবে কথা বলার আহ্বানও জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘এমন একটি সংকটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং মেয়ররা ছুটবেন নগরের প্রতিটি আনাচে-কানাচে, পাড়া-মহল্লায়। ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম জোড়দার করবেন। ছুটবেন হাপাতালে-হাসপাতালে, চিকিৎসাকার্য আরো বেগবান করতে, অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন। তা না করে শুধুই আবোল-তাবোল বকছেন!’
এমএএম/বিএস