দেশে চিকিৎসকসহ দুই শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৩ চিকিৎসকসহ ৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ায় রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল লকডাউন করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে লকডাউনের পক্ষে নন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। নন-ক্যাডারদের নিয়োগ, ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ শেষ বর্ষের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণসহ স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করে সেবা দেয়ার বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
পুরান ঢাকার লাখ লাখ লোক ছাড়াও আশপাশের জেলা উপজেলার মানুষের ভরসার জায়গা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালটি। একের পর এক চিকিৎসক নার্স এবং স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এখন বিপাকে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, 'আমি ছেলেমেয়েকে বাসায় রেখে আসি। এখন জীবনের ঝুঁকি, বাসায় যাই তাপর ড্রেসগুলো গরম পানি দিয়ে ধুই। গোসল করি। রোগীদের তাছে যেতে হয়। সময়মত একটা জিনিস চাইলে পাইনা। এমনকি ওয়ার্ডে একটা স্যাভলনও আমরা পাইনা।'
আরেক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, 'রোগী ধরি, ট্রলি ধরি, আমার প্রতি মূহুর্তে একটা গ্লাভস থাকা দরকার। কিন্তু আমরা এটা পাচ্ছিনা।'
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ২৩ চিকিৎসক, ১০ নার্স এবং ৯ স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ব্রি. জে. কাজী মোহাম্মদ রশিদ উন নবী বলেন, 'যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে কিভাবে চলবো? এ ব্যাপারে একটা চিঠিও দিয়েছি। এখনও উত্তর পাইনি।'
এদিকে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরও ৯ চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন।
সারাদেশে দুইশো'র বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে জানান বাংলদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, 'স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স মিলিয়ে দুশোর অধিক হবে আক্রান্ত হয়েছেন। কিছুদিন আগে আমাদের কিছু ডাক্তার নেয়া সরকারের পক্ষ থেকে। ক্যাডারদের নেয়অ হলো, আর নন ক্যাডারদের আমরা চাকরি দিতে পারলাম না। তাদেরকে আরেকটু ট্রেনিং দিলে আমরা তাদের কাজে নামাতে পারবো। ইন্টার্নিদের যদি আমরা কাজে লাগাই তাহলে সব হাসপাতালে বাড়বে চিকিৎসকের সংখ্যা।'
তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল লকডাউনের বিপক্ষে সোহরাওয়ার্দি মেডিক্যালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া। তিনি বলেন, 'হাসপাতাল লকডাউন এটাতেই আমি বিশ্বাস করি না। আমাদের হাসপাতালে কয়েকজন ডাক্তার আক্রান্ত আছেন। কিন্তু লকডাউনের কোন চিন্তা-ভাবনা নেই। যদি কোন অসুস্থতাবোধ করেন তাহলে আমাদের হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করবো।'
জেডএইচ/এসকে