ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিনে প্রতি কেজি পেঁয়াজ যেখানে ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে, আজ কেজিপ্রতি ১০-১২ টাকা করে কমে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হওয়ায় দাম কমতে শুরু করছে। সামনে আরও কমবে বলে জানান তারা।
তবে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা চলছে। সব ধরনের সয়াবিন তেলের দাম ঊর্ধ্বগতিতে। বিক্রেতারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও বেড়েছে। বিক্রেতারা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলছেন, সরকারের যথাযথ তদারকির অভাবে যে যার মতো কর দাম বাড়াচ্ছে। মনে হয় তেলের দাম কেউ কমাতে পারবে না।
তবে এখনো বাজেট পাস না হলেও বাজেটের প্রভাব কিছুটা দেখা গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেকে জিনিসের মধ্যে ২-৫ টাকা করে দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। জানতে চাইলে বিক্রেতারা অনেকে বাজেটের দোহাই দেন। কেন বাজেটের দোহাই এ নিয়ে তারা সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
শুক্রবার (৪ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, পেঁয়াজ ও তেল নিয়ে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে সবজি নিয়ে তেমন কোনো অসন্তোষ প্রকাশ করেননি ক্রেতারা।
তেলের দাম নিয়ে বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে পুষ্টি ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের তেলের বোতল ৬৯০ টাকা, রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬৮৫ টাকা, বসুন্ধরা ৬৭০ টাকা, ফ্রেশ ৬৬০ টাকা, তীর ৬৬০ টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১২২ টাকা এবং পাম বিক্রি হচ্ছে ১১২ টাকা, যা গত সপ্তাহে একই দাম ছিল। বিক্রেতাদের মতে, তেলের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং আরও বাড়বে।
কাউসার নামের এক বিক্রেতা বলেন, “এখনো বাজেট পাস হয়নি, নতুন তেলও আসেনি, তার আগেই তেল ও পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এটা কোন ধরনের দেশ। যার ইচ্ছা সে দাম বাড়ায় ও কমায়। যা চিন্তা আমাদের মতো গরিবদের, ধনীদের কোনো চিন্তা নেই।”
পেঁয়াজের দাম যেখানে গত সপ্তাহে ৫৫-৬০ টাকা ছিল। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা।
আইনুল হক নামের এক বিক্রেতা বলেন, “দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। এখন কেজিপ্রতি ৪৮-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু হলে আরও কমবে বলে তিনি জানান।
আলমগীর নামের এক ক্রেতা বলেন, “পেঁয়াজ নিয়ে কদিন পরপরই ঝামেলা। কিছুদিনের জন্য দাম কমলেও একটা না একটা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই। কখনো ভারতের কথা বলে, কখনো দেশে উৎপাদন নেই, এ কথা বলে। আসলে কোনটা ঠিক আমরা জানি না।”
চালের বাজার আগের মতোই আছে। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪০ থেকে ৪২ টাকা এবং আটাশ ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
মাংসের বাজার প্রায় আগের মতোই। ব্রয়লার মোরগ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৩০, সোনালি ২৩০, দেশি ৫৫০-৬০০। গরুর মাংস ৫৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, করলা ৪৫-৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটোল ৩০ টাকা, ধুন্দল ২০ টাকা, ঝিঙে ৩০-৩৫, চিচিঙ্গা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাকরোল ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লতি ৪০ টাকা, মরিচ ৩০ টাকা, টমেটো ৫০-৬- টাকা। এছাড়া প্রতি পিস কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ২০ টাকা, কাঁচ কলার হালি ২০ টাকা, লেবুর ডজন ৩০ টাকা।
অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, রসুন, আদা, ও ডিমের। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২২-২৫ টাকা, ভারতীয় রসুন ১৪০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চীনা আদা ১২০ টাকা এবং দেশি আদা ৮০ টাকা। প্রতি হালি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪০ টাকা।