বিধিনিষেধের নবম দিনে সড়কে কমেছে আনাগোনা

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২১, ০১:১৪ পিএম বিধিনিষেধের নবম দিনে সড়কে কমেছে আনাগোনা

কঠোর লকডাউনের নবম দিনে ঢাকার সড়কগুলোয় যানবাহনের সংখ্যা কমেছে। আজ শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের চেয়ে লোকজন কম বের হয়েছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে কিছুটা ভয় বেড়েছে। একেবারেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই এখন আর ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এ ছাড়া পুলিশের হাতে আটকের পাশাপাশি মামলার ভয়ও আছে।

শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সিগন্যালগুলো পার হতে কোনো গাড়ি অপেক্ষায় নেই। পোশাক কারখানা ও রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের গাড়িগুলোই চলছে। এর বাইরে জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি রাস্তায় রয়েছে। যদিও গতকাল ঢাকার সড়কগুলোর প্রায় প্রতিটি সিগন্যালেই গাড়িগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।

গাবতলী ব্রিজ হয়ে যেসব যানবাহন ঢাকায় ঢুকছে, সেগুলোকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। যারা একেবারেই কোনো কারণ দেখাতে পারছে না, সেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। হেঁটে গাবতলী ব্রিজ পার হয়ে অনেককে ঢাকায় ঢুকতে দেখা যায়।

এই চেকপোস্টের ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা মো. মানিক চৌধুরী বলেন, অন্য দিনের থেকে আজ গাড়ি কম। মানুষও একটু সচেতন হয়েছে। কারণ দিন দিন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। তবে মানুষের অজুহাতের শেষ নেই।

গাবতলী দিয়ে যেসব গাড়ি ঢাকা ছাড়ছিল, সেগুলোকেও চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চেকপোস্টের ট্রাফিক সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেন বলেন, লকডাউনের অন্য দিন থেকে আজ কম গাড়ি বের হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আজ তো বন্ধের দিন। আজ আর তেমন এক্সকিউজ দাঁড় করাতে পারবে না। তাই রাস্তায় গাড়ি কম।

মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। তবে কোনো মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার এলেই সেগুলোকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন তাঁরা। এই চেকপোস্টের একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ‘মামলা আর আটকের ভয়ে মানুষ এখন কম বের হচ্ছে। কারণ লকডাউনের মধ্যে প্রতিদিনই অনেক মানুষ বাইরে বের হয়ে মামলা খেয়েছে।

গাবতলী ব্রিজ পার হয়ে অনেককে মোটরসাইকেল ভাড়া করে সাভার, নবীনগর, বাইপাইল ও হেমায়েতপুর যেতে দেখা যায়। আরিফ হোসেন নামের একজন তরুণ সিঙ্গাইর যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল ভাড়া করেছেন। সিঙ্গাইর থেকে আরেকটি মোটরসাইকেলে করে তিনি মানিকগঞ্জ যাবেন। মানিকগঞ্জ থেকে পাটুরিয়া হয়ে রাজবাড়ীর গ্রামের বাড়ি যাবেন বলে জানান তিনি।
 
আরিফ বলেন, ঢাকায় কাজ নেই। বসে বসে খেলে তো আর চলবে না। বাড়ি গেলে কিছু একটা করে পেট চালানো যাবে। তাই অনেক কষ্ট হবে জেনেও বাড়ি যাচ্ছি।

আমিনবাজারে শরিফুল হাসান নামের একজন মোটরসাইকেলচালক বলেন, পুলিশ ঝামেলা করে। মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া মানা, এটাও জানি। কিন্তু বের না হলে যে খাবার জুটবে না। লকডাউনের মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে ট্রাফিক পুলিশের মামলাও খেয়েছেন বলে জানান তিনি।

শুক্রবার মানুষ কম বের হওয়ায় বিভিন্ন পয়েন্টে অনেক রিকশাচালককে বসে থাকতে দেখা যায়। লকডাউনের মধ্যে শুধু রিকশা চলাচলের অনুমতি থাকায় অন্য দিন তাঁদের ভালো আয় হলেও শুক্রবার অনেকেই ভাড়া পাচ্ছেন না। মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজারে আবু হানিফ নামের একজন রিকশাচালক বলেন, আইজ তো মানুষ অনেক কম, তাই ভাড়াই পাইতেছি না।

জাগরণ/এওয়াই/এসকে