দেশে করোনা সংক্রমণের হার অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। দেশের হাসপাতালগুলোর কোভিড বেড (শয্যা) ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে। এই মুহূর্তে বিধিনিষেধ না মানলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ভার্চুয়াল বুলেটিনে এই শঙ্কা প্রকাশ করেন অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
তিনি বলেন, দেশের করোনা সংক্রমণ রোধে আরও এক সপ্তাহ কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে বিনাপ্রয়োজনে কেউ বাড়ি থেকে বের হলে তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ মানুষর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। যারমধ্যে একটি অংশ মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছাবে। এসব রোগীদের মধ্যে কারও কারও মাল্টি অর্গান ফেউলিইর হতে পারে। এসব রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে। কোভিড চিকিৎসায় অক্সিজেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলাসহ সব স্থানে লোফ্লো অক্সিজেন দেওয়া হয়। এআরবি মাস্কোর মাধ্যমে মিনিটে ১৫ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যায়। যদি ১৫ লিটারের বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তাহলে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, সি প্যাপ বা বাইপ্যাপ দিয়ে অক্সিজেন দেওয়া যায়। এর বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন হলে তাকে আইসিইউতে ভেন্টিলেটর দিয়ে অক্সিজেন দিতে হয়।
তিনি বলেন, সংক্রমণ এখনো বেড়েই চলেছে। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, হাসপাতালের সমস্ত খালি বেড পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে। তখন সবাই মিলে বিপদে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্রের এই আশঙ্কা প্রকাশের দিনই দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৪১৯ জনের মৃত্যু হলো। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জনে।
দেশে টানা ১৫ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু দেখছে বাংলাদেশ। আগে দিন শনিবার (১০ জুলাই) ১৮৫ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে শুক্রবার (৯ জুলাই) ২১২ জনের মৃত্যু হয়।
জাগরণ/এসকেএইচ