র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ : প্রধানমন্ত্রী

জাগরণ প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২২, ০১:১৪ পিএম র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আর কী বলব, যারা অপরাধীদের রক্ষা করে আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশের (র‌্যাব সদস্যদের) ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’।

সোমবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০টায় কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদর দপ্তরের বিশেষ দরবারে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আর কী বলব, যারা অপরাধীদের রক্ষা করে আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশের (র‌্যাব সদস্যদের) ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’। আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা সংস্থার যে কেউ যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে আমরা কিন্তু শাস্তির ব্যবস্থা করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনাকারণে বিনাদোষে র‌্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। আমি স্পষ্ট বলি, আমেরিকায় ছোট্ট বাচ্চা ছেলে জাস্ট পকেটে হাত দিয়েছে, তাকে গুলি করে মারল অথবা পা দিয়ে পাড়া দিয়ে গলা চেপে মেরে ফেলে দিল। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে অপরাধ করলে শাস্তি দেওয়া হয় না।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, এখানে কেউ অপরাধ করলে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। তারপরও দুর্ভাগ্যের বিষয় যে যারা হলি আর্টিজানের মতো এ ধরনের অভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাদের এই সাফল্যে এরা দুঃখ পেয়েছে কি না আমি জানি না। তবে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে, সেটাই সত্য। সেখানে এ রকম নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।

তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে দুঃখজনক হলো- আমাদের দেশের কিছু মানুষ নানান ধরনের অপপ্রচার চালায়। তারা কিন্তু অপরাধী। কোনো না কোনো কারণে চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে। সেখানে আমাদের যুদ্ধাপরাধীরা যেমন ঠাঁই পেয়েছে, তেমনি জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিও আমেরিকায় বসবাস করছে। তাকে তারা সেখানকার সিটিজেন করে নিয়েছে। আমরা বারবার তাদের রিকোয়েস্ট করেছি। একের পর এক প্রেসিডেন্টের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এটাই যাদের চরিত্র, তাদের বিষয়ে আর কী বলব?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলব। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পরে হলেও বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা শুরু হয়। আজকের এই উন্নয়নে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানসহ র‌্যাবেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্ব এই বাহিনীকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছে।

র‍্যাব সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে আপনাদের অবদান অপরিসীম। কারণ, দেশের আইনশৃঙ্খলা যদি স্থির না থাকে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত না থাকে, তাহলে উন্নয়ন করা সম্ভব হয় না। আজ সবার প্রচেষ্টায় দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হচ্ছে সুশৃঙ্খল সামাজিক ব্যবস্থা। সেটাই আমাদের দেশে আমরা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। এ ক্ষেত্রে র‍্যাবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। আমাদের এ অবস্থাটা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, যেন জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে পারি।

আইনকানুন মেনে জনগণের সেবক হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব র‍্যাব সদস্যরা যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

র‌্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ ছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউএম