সপ্তাহের মাথায় আবারও গুলিস্তানের ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা গেছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। বিস্ফোরণে সাত তলা ভবনের প্রথম তিনটি তলা ধ্বসে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১১ টি ইউনিট প্রায় চারঘন্টা ধরে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা শেষে জানায়, ভেতরে জীবিত কেউ আটকা নেই। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর বোম ডিসপজিবল টিম কাজ করছে।
বিস্ফোরণের ঘটনা নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
এই বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের খবর নিতে সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ভবনটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বোমা বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞসহ অন্য বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন এটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা। অনেক সময় গ্যাস জমলেও বিস্ফোরণ হতে পারে। এ ছাড়া কোনও নাশকতা কি না, সেটিও বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করে দেখছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থাও এর কারণ খতিয়ে দেখছে।
বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের ভিড় বাড়তে থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহতদের আর্তনাদ ও স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। মূহুর্তেই শতাধিক রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। তবে দ্রুত পরিস্থিতি সামলাতে জরুরীভাবে ডাকা হয় অন্যান্য চিকিৎসকদের। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও ভর্তি হয় অর্ধশতাধিক।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টা। জনসমাগমে মুখর গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস কাউন্টার এলাকা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ, দিগ্বিদিক শত শত মানুষের ছোটাছুটি। আহাজারি।
কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা যায়, ৭ তলা কুইন্স মার্কেটের নীচ তলায় ঘটেছে মূল বিষ্ফোরণ। যেখানে ছিল বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির দোকান। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটা বেশি ছিল যে, নীচতলার পাশাপাশি ওই ভবনের দুই তলার সেনিটারি দোকানও লণ্ডভন্ড হয়ে যায়। সামনের দেয়াল ভেঙে বিভিন্ন ভারী পণ্য ছিটকে পড়ে সড়কে।
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের ব্র্যাক ব্যাংকের ৫ তলা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোর এবং অন্যপাশের আরেকটি ভনের নীচতলাও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান বিস্ফোরণের ধাক্কায় সড়কে ছিটকে পড়া বিভিন্ন পণ্য ও কংক্রিটের আঘাতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আহত হয়।
বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বিধ্বস্ত ভবনসহ আশপাশে অনুসন্ধান শেষে বেশ কয়েকটি মরদেহ উদ্ধার করে তারা। যোগ দেয় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। তারা বলছেন, বিস্তারিত তদন্তের পর জানা যাবে বিস্ফোরণের আসল কারণ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিস্ফোরণস্থলের আশপাশে অনেক মানুষের যাতায়াত থাকায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।
জাগরণ/জাতীয়/দুর্ঘটনা/এসএসকে