দেশের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো। চালু হলো বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু রেল যোগাযোগ। মঙ্গলবার দুপুরে সবুজ পতাকা নেড়ে এই স্বপ্ন যাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল বদল ঘটে গেল।
ঢাকা ও কলকাতায় যাতায়াতের জন্য যারা রেলপথ ব্যবহার করেন তাদের সময় বাঁচবে অনেক।
সব মিলিয়ে দেশের যোগাযোগের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো এদিন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সড়কপথে মাওয়া রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে বেলা পৌনে ১১টার দিকে মাওয়া স্টেশনে পৌঁছান তিনি।
সেখানে অনুষ্ঠান মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার পর শেখ হাসিনা বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ট্রেন চলাচলের।
এরপর ট্রেনে চেপে মাওয়া ভাঙার উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
ট্রেনে ওঠার আগে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা নিজে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকেট কাটেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সবুজ পতাকা নেড়ে সিগন্যাল দেয়ার পর শুরু হয় স্বপ্ন যাত্রা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনে করে ভাঙ্গায় গিয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন। উদ্বোধনী ট্রেনে রয়েছে ১৪টি কোচ। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে এই যাত্রায় মন্ত্রিসভা ও সংসদ সদস্যসহ রয়েছেন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
গত বছর জুন মাসে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। রেল পথ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন না হওয়ার পর গত ৪ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতু ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলে এই রুটে।
এতদিন ঢাকা থেকে খুলা পর্যন্ত সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে থেকে বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত বেনাপোল এক্সপ্রেস চলতো বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে। এখন এই ট্রেনগুলো গন্তব্যে যাবে পদ্মা সেতু হয়ে।
মধুমতি এক্সপ্রেসের গোয়ালন্দ-ঢাকা রুট বদলে ফেলা হচ্ছে। এই ট্রেনটি পদ্মা সেতু ব্যবহার করে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে চলাচল করবে। ঢাকা-কলকাতা রুটের আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসও রুট পরিবর্তন করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।
এদিকে খুলনা থেকে গোয়ালন্দ রুটে চলাচলকারী মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেসকে ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।
জাগরণ/যোগাযোগ/এসএসকে