পৃথিবী থেকে সাড়ে ছয় হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি মেঘপুঞ্জের বিস্ময়কর আলোকচিত্র প্রকাশ করেছে নাসার জেমস ওয়েব সুপার স্পেস টেলিস্কোপ।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ‘পিলারস অব ক্রিয়েশন’ নামের মেঘপুঞ্জটির আলোকচিত্র প্রকাশ করা হয়। সারপেন্স নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত হাইড্রোজেন গ্যাস ও ধূলা দিয়ে গঠিত ঘন মেঘের সমষ্টি এই পিলারস অব ক্রিয়েশন বা সৃষ্টির স্তম্ভ।
এই প্রথম যে পিলারস অব ক্রিয়েশনের ছবি তোলা হলো তেমনটা নয়। প্রতিটি বড় টেলিস্কোপই আগে এর ছবি তুলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো হাবল টেলিস্কোপের তোলা ১৯৯৫ ও ২০১৪ সালের ছবি।
তবে, জেমস ওয়েবের তোলা আলোকচিত্রটি আগের সব টেলিস্কোপকে ছাড়িয়ে গেছে। ইনফ্রারেড ডিটেক্টরের মাধ্যমে জেমস ওয়েব নতুন জন্ম নেয়া নক্ষত্রের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছে।
মেসিয়ার ১৬ বা ইগল নেবুলা নামে পরিচিত একটি অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই পিলারস অব ক্রিয়েশন। এই অঞ্চলে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নক্ষত্রের জন্ম হচ্ছে।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক মার্ক ম্যাককরিয়ান বলেন, নব্বইয়ের দশক থেকে ইগল নেবুলা নিয়ে গবেষণা করে আসছেন তিনি। হাবলের তোলা ছবির মাধ্যমে সবসময়ই পিলারগুলোর ভেতরে তরুণ নক্ষত্রের খোঁজ করেছেন তিনি। জেমস ওয়েবের তোলা ছবিগুলো অনবদ্য হবে তা তিনি জানতেন, আর হয়েছেও তাই।
মেসিয়ার ১৬-এর এই স্তম্ভগুলো তৈরি হয়েছে কাছাকাছি অবস্থিত বিশাল নক্ষত্র থেকে বিকিরিত আলট্রাভায়োলেট আলো থেকে। তবে এই বিকিরণের ফলে স্তম্ভগুলো আবার সর্বদা ভেঙ্গেও পড়ছে।
তবে যদি কোনও জাদুমন্ত্রবলে আজকে সেখানে পৌঁছে যাওয়া যেত, তাহলে খুব সম্ভবত দেখা যেত সেখানে স্তম্ভগুলোর কোনও অস্তিত্বই নেই। কেননা, জেমস ওয়েব যেই ছবিটি তুলেছে সেটিতে দেখা যাচ্ছে সাড়ে ছয় হাজার বছর আগের অবস্থা। জেমস ওয়েবের দর্পণে যেই আলো পড়েছে তা এসে পৌঁছাতে সময় লেগেছে সাড়ে ছয় হাজার বছর।
জাগরণ/বিজ্ঞানওপ্রযুক্তি/এসএসকে