ওভালে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস করতে নামার সঙ্গে সঙ্গে নতুন এক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হয়ে তিনি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোনো ম্যাচে খেলতে নামার পাশাপাশি অধিনায়কত্ব করতে নামলেন।
ট্র্যাজেডি আর রোমান্টিকতা দুইটাই মাশরাফীর জীবনে বহুবার এসেছে। হাঁটুর ইনজুরিতে বারবার দল থেকে ছিটকে পড়া,৭ বার অপারেশন করেও বারবার ফিরে আসা এ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের বারবার অদল-বদল! ২০১১ বিশ্বকাপে দলে না থাকায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়া, প্রথম সন্তান হুমায়রার জন্মের সময় প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যাওয়া, পুত্র সাহেলের ভয়ানক অসুস্থ হওয়ার পরেও দেশ ও দলের প্রতি আনুগত্যের জায়গা থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ চলাকালে দেশে না আসা আরও অনেক বিষয় আছে যা তাকে হিমালয় ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
অনেক স্মরণীয় ম্যাচের জয়ের নায়ক মাশরাফী। ২০০৪ সালের ভারত বধ, ২০০৭ বিশ্বকাপে আবারো ভারতকে হারিয়ে তাদের বিশ্বকাপ মিশন শেষ করা, ২০১০ সালে প্রথম ইংল্যান্ডকে ওয়ানডেতে হারানো, এমন অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। তবে স্বল্প পরিসরের এই লেখায় বিশেষভাবে এই তিন ম্যাচ উল্লেখের কারণ হলো তখন জয়ের অভ্যাসটা টাইগারদের ঠিক গড়ে ওঠেনি, একেকটা জয় পেতে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হতো।
মাশরাফীর নেতৃত্বে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা, তারপর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতা, এশিয়া কাপে রানার্সআপ হয়ে আসা এবং আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়া স্বাভাবিকভাবেই তাকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিককে একটা ট্রফি দিয়ে কি পরিমাপ করা যায়! তিনি নিজেই তো বলেছেন একটা ট্রফি দিয়ে কখনো আমাকে পরিমাপ করা যাবে না। আর আমার জন্য নয়, ট্রফি জেতা দরকার দেশের জন্য। ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি তো জেতা হয়েই গেছে। এবার তবে লর্ডসের ব্যালকনিতে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচু করে মাশরাফী বাহিনীর সৃষ্টি সুখের উল্লাস বিশ্ব দেখুক অবাক বিস্ময়ে।
আরআইএস