চট্টগ্রামে সিরিজের একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিনটাও নিজেদের করে নিয়েছে আফগানিস্তান। প্রথমবারের মতো সাদা পোশাকে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নেমে জয়ের পথে বেশ ভালোভাবেই আছে তারা। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করেই যে জিততে হবে এটাও এরইমধ্যে নিশ্চিত করেছে আফগানরা।
তৃতীয় দিনশেষে বাংলাদেশের চেয়ে ৩৭৪ রানে এগিয়ে আছে তারা। ৩৪ রান করে অপরাজিত থাকা আফসার জাজাইয়ের সঙ্গে চতুর্থ দিন শুরু করবেন শূণ্য রানে অপরাজিত থাকা ইয়ামিন আহমেদ জাই। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৩৭ রান করে তৃতীয় দিনশেষ করেছে আফগানিস্তান।
চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানের ৩৪২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ২০৫ রানেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তবে ১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা সফরকারীরা সাকিব আল হাসানের স্পিন তোপের পর নাঈম হাসানের আঘাতের শিকার হয়। লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত তাদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৫৬ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা সফরকারীরা সাকিব আল হাসানের স্পিন তোপের মুখে পড়ে প্রথম ওভারেই বিপদে পড়ে। সাকিব প্রথম ওভারে নিজেই বল হাতে নিলে তার করা প্রথম বলে চার মারেন ইনসানউল্লাহ। পরের বল ডট। তৃতীয় বলেই সাকিবের বলে লেগ বিফোরে কাটা পড়ে ফিরে যান আফগান ওপেনার। আগের ইনিংসে আফগানদের হয়ে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান রহমত শাহের ক্যাচ ধরে তাকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগান সাকিব। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে তৃতীয় উইকেট পেতে পারতেন সাকিব। ইবরাহিম জাদরানের খেলা ডিফেন্সিভ শটে বল গিয়েছিল সিলি পয়েন্টে। কিন্তু ফিল্ডার মুমিনুলের হকের রিফ্লেক্স ধীর থাকায় দ্রুতগতিতে আসা বলটি তিনি ক্যাচে পরিণত করতে পারেননি। তাই ইবরাহিম শূন্য রানে জীবন পেয়ে এখনো ক্রিজে আছেন।
নাঈমের করা দুর্দান্ত এক বল টার্ন করে ছুঁয়ে যায় ১২ রান করা হাশমতউল্লাহ শাহিদির ব্যাট। বল মুশফিকের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে তড়িৎ গতিতে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সৌম্য সরকার ক্যাচ লুফে নেন।
এরপর বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশের সামনে বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করানোর পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুই আফগান ব্যাটসম্যান আসগর আফগান ও ইবরাহিম জাদরান। দুই বার জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত নাঈম হাসানের বলে ৮৭ রান করে ফেরেন ইবরাহীম । তার আগেই তাইজুলের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে লেগ স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ৫০ রানে ফিরে যান আসগর আফগান। এর সঙ্গে ভাঙে তার ও ইবরাহিমের করা ১০৮ রানের জুটি।
এই দুই জনের বিদায়ের পর ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান। তবে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীকে ৮ রানে মিরাজ ফেরানোর পর ২২ বলে ২৪ রান করা রশিদ খানকে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। এরপর ১৪ রান করা কায়েসকে সাকিব ফেরালে আফগানিস্তান দিনশেষ করে ৮ উইকেটে ২৩৭ রান নিয়ে।
বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব আল হাসান ৩টি, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান পেয়েছেন সমান দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন আর বাকি উইকেট পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।