বেলজিয়ামের স্বর্ণজয়ী প্যারালিম্পিয়ান মারিয়েকে ভেরভুর্ট দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে শরীরের অসহনীয় ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছামৃত্যুকে বরণ করে নিলেন। ইউথেনেশিয়ার মাধ্যমে তিনি স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেন।
নিজের সীমাবদ্ধতাকে জয় করে প্যারালিম্পিকের আসরে হুইল চেয়ার দৌড় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জিতেছেন অপ্রতিরোধ্য অ্যাথলেট মারিয়েকে ভেরভুর্ট।
২০১২ সালের লন্ডন প্যারালিম্পিকে ১০০ মিটার হুইল চেয়ার দৌড়ে স্বর্ণ এবং ২০০ মিটারের হুইলচেয়ার দৌড়ে রৌপ্য জেতেন ভেরভুর্ট। ২০১৬ সালের রিও প্যারালিম্পিকে ৪০০ মিটার দৌড়ে রৌপ্য এবং ১০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পান তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পরও খেলাধুলায় নিজের অর্জন দিয়ে তিনি অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছিলেন।
দুরারোগ্য পেশীর রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অনবরত শরীরের তীব্র ব্যাথায় ভুগতেন বেলজিয়ামের প্যারালিম্পিয়ান মারিয়েকে ভেরভুর্ট। সেই সঙ্গে প্রায়ই হতো খিঁচুনির আক্রমণ। ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাকে নিতে হতো শক্তিশালী ব্যথানাশক ওষুধ।
খেলাধুলা মারিয়েকের জন্য ওষুধের মতো কাজ করতো। দ্রুত সুস্থ হতেই শুরু করেন হুইলচেয়ার বাস্কেটবল খেলা। এরমধ্যেই ২০০৮ সালে প্যরালাইসিসে আক্রান্ত হন তিনি। এ সময় তার শরীরের বেশিরভাগ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যায়। চলাফেরাও সীমিত হয়ে পড়লে তিনি হুইলচেয়ার দৌড় খেলা শুরু করেন। প্রশিক্ষণের প্রতিটা মুহূর্ত অসহনীয় হলেও তার মনোবলে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি।
২০০৮ সালেই স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতিপত্রে সই করেন ভেরভুর্ট। তবে ব্যাথার তীব্রতা দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবারকে (২২ অক্টোবর) স্বেচ্ছামৃত্যুর দিন হিসেবে বেছে নেন ৪০ বছর বয়সী এই নারী ক্রীড়াবিদ।
স্বেচ্ছামৃত্যুর আগে মারিয়েকে ভেরভুর্ট বলেছিলেন, প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আমি প্রায়ই কাঁদি। প্রচুর ব্যথানাশক ওষুধের প্রয়োজন হয় আমার। এতো ব্যথার মধ্যেও কীভাবে হাসি ধরে রাখি, তা অনেকেই জানতে চান। আমার জন্য হুইলচেয়ারে করে খেলা এক ধরনের ওষুধই।
সূত্র : ডিবিসি নিউজ
আরআইএস