বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) রেফারিজ কমিটির উদাসীনতায় পর্যাপ্ত ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছেন না নারী রেফারিরা। তবে নারী রেফারিরা চাইছেন, অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে ম্যাচ পরিচালনা করতে।
গত মাসেই ফিফার সহায়তায় দুই আন্তর্জাতিক নারী রেফারি বাংলাদেশের ২৫ নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা মুখিয়ে আছে ক্লাস থেকে পাওয়া শিক্ষা মাঠে প্রয়োগ করার জন্য, কিন্তু ম্যাচ পাচ্ছেন না। রেফারিজ কমিটির এই উদাসীনতা যেন দেখেও দেখছে না দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা বাফুফে। তাই অভিজ্ঞ নারী রেফারিরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকটাই বেকার হয়ে ।
প্রায় একযুগ মাঠে বাশি বাজিয়ে ফুটবল ম্যাচে রেফারির তকমা পেয়েছেন নাহিদা আহমেদ ইতু। তার অভিযোগ, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও তাকে ম্যাচে দায়িত্ব দেয়া হয় কালে-ভদ্রে।
ইতু বলেন, ওই যে একটা ভয় যে আমরা পারবো কি না। “মেয়ে মানুষ” হয়ে দুই দলের যে কোচ তাদেরকে ম্যানেজ করতে পারবো কি না। বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টে আমি ম্যাচ পরিচালনা করেছি। এছাড়া আর কোনো ম্যাচ আমি পরিচালনা করতে পারিনি।
আরেক নারী রেফারি নদী ওয়াহাবের মন্তব্য, দেশে মাঠে বাঁশি বাজানোকে পেশা হিসেবে নেয়ার মতোঁ অবস্থা নেই। তাই অন্য পেশা ঠিক রেখে আসতে হয় শখের কাজে। সেখানেও যদি কর্তৃপক্ষ অনীহা দেখায়, তাহলে কীভাবে হয়।
নদী ওয়াহাব বলেন, এখানে আমার মনে হয় সম্মানী যেটা, সেটা অবশ্যই বাড়ানো উচিৎ। সম্মানীটা বাড়ালে তখন এটা কাজ (পেশা) হিসেবে মানুষ নেবে। আমার কাছে মনে হয় যে, নারী রেফারিদেরকে তুলনামূলকভাবে কম ম্যাচ দেয়া হচ্ছে।
তবে নারী রেফারিদের প্রতি অবেহলার দৃষ্টি বাফুফের, এ কথা মানতে রাজি নন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। তিনি জানালেন, ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় নারী ফুটবল লীগে পর্যাপ্ত ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব তাদের দেয়া হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের নারী ফুটবল লীগে প্রতিদিন খেলা থাকবে এবং সেই লীগটা সম্পূর্ণ ব্যাপ্তি হবে এক থেকে দেড় মাস; তাই আমরা আশা করছি সব ম্যাচগুলো নারীদের দিয়ে করতে পারবো। সেটা যদি নাও হয়, আমরা লক্ষ্যস্থির করেছি, অধিকাংশ ম্যাচ তাদের দিতে।
সব মিলিয়ে ফুটবল বোদ্ধারা মনে করেন, নারী খেলোয়াড়দের পাশাপাশি নারী রেফারিদেরও সংশ্লিষ্টতা বাড়াবে বাফুফে। যাতে তারাও দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিজেদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেলে ধরতে পারেন।
সূত্র : ডিবিসি নিউজ
আরআইএস