দেহসৌষ্ঠব নিয়ে বরাবরই একটি ট্যাবু রয়েছে নারীদের মধ্যে। আরো কোনো নারী শরীরচর্চা করলে অনেকেই বাঁকা নজরে দেখেন কিংবা ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন। পুরুষ এবং নারী উভয়েরই শরীরচর্চা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। ইউরোপের দেশগুলো এ ক্ষেত্রে কিছুটা আধুনিক মানসিকতার পরিচয় দিলেও উপমহাদেশের দেশগুলোতে দৃষ্টিভঙ্গির এই সমস্যা প্রবল। নারীদের দেহসৌষ্ঠব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাই অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর মতো সমস্যা রয়েছে বাংলাদেশেও। তবে সেই কঠোর বেড়াজাল ভেঙে এগিয়ে এসেছেন মাকসুদা মউ, বাংলাদেশের নারী বডিবিল্ডার। তাকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা একটি বিশেষ ফটোফিচারের আয়োজন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মাকসুদা মউ বাংলাদেশের দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় জয়ী হলেন। মাকসুদার সামনেও অনেক বাধা এসেছে। সে সব পেরিয়ে আজ তিনি বহু নারীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।
ছোট থেকে অবশ্য শরীরচর্চার প্রতি কোনো আলাদা ভালোলাগা ছিল না তার। মাকসুদা পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর ভারতে ছিলেন। তখনই তিনি সুস্থ থাকার জন্য জিমে যোগ দেন। ক্রমে শরীরচর্চা তার রোজকার অভ্যাসে পরিণত হয়। প্রতিদিন যেমন খেতে, ঘুমতে হয়, শরীরচর্চাও তার কাছে ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মাকসুদা স্থির করেন, শরীরচর্চা নিয়ে আরো গভীরে জানবেন। তাই ভারতেরই একটি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
বাংলাদেশে ফিরে জিম প্রশিক্ষক হয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি নারী বডিবিল্ডার হওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করে দেন। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। জিমে শরীরচর্চা করতে আসা বেশির ভাগ পুরুষ একজন নারীকে প্রশিক্ষক হিসেবে মেনে নিতে পারতেন না। তার ওপর ছোট পোশাক পরার জন্যও কুকথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু এই লড়াইয়ে প্রথম থেকেই তিনি পাশে পেয়েছেন পরিবারকে।
২০১৯ সালে প্রথমবার বাংলাদেশ নারী দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হন মাকসুদা। নিজের খামতিগুলোতে চিহ্নিত করে ফের লড়াই শুরু হয় তার। ২০২০ সালে ওই প্রতিযোগিতার বিজেতা হন তিনি।