ঘন্টায় ৪.১৬৬ মাইল দৌড়ানো সম্ভব? হতে পারে। যদি এভাবে পরবর্তী কয়েক ঘন্টা যাবত দৌড়াতে বলা হয়? হয়তো সেটাও সম্ভব। কিন্তু যদি এমন প্রতিযোগিতা হয়, যেখানে কয়েকদিন যাবত এভাবে দৌড়াতে হতে পারে? এমন অসম্ভব ধরণের প্রতিযোগিতা বিগ ডগস ব্যাকইয়ার্ড আল্ট্রা, যার শুরু থাকলেও শেষ নেই। শেষ প্রতিযোগী ছিটকে না পড়া পর্যন্ত চলে এই রেস।
এমন রেসের আয়োজক গ্যারি ক্যান্ট্রেল। তার বুলডগের নাম অনুসারেই রেসের নামকরণ করা হয়েছে, যার একমাত্র কাজ টেবিলের নিচে ঘুমঘুম চোখে রেস উপভোগ করা। আর স্টার্টিং পয়েন্টের পর শেষ লুপে এসে ‘ফিনিশ’ শব্দটির আগে যুক্ত থাকে আরও তিনটি নিষ্ঠুর শব্দ- “দেয়ার ইজ নো”। যেহেতু এই রেস শেষ হওয়ার একমাত্র শর্ত, শেষ প্রতিযোগী টিকে থাকা, সেক্ষেত্রে একজন তিন দিনে প্রায় ৩০০ মাইল দৌড়েও রেস শেষ করেননি এমনটি হতে পারে।
তবে আয়োজক এবং প্রতিযোগিরা এমন রেসের জন্য অপেক্ষা করেন বেশ আগ্রহের সাথেই। এই রেসের মূল উদ্দেশ্য কে কতটা জোরে দৌড়াতে পারে সেটি নয়, বরং কে কতটা সময় টিকে থাকতে পারে এটিই নির্ণয় করা হয় এমন প্রতিযোগিতায়। প্রতিবার লুপ শেষ করে আবারও ফিনিশিং থেকে শুরু করার মধ্যে ১৫ মিনিট সময় পাওয়া যায়, যখন প্রতিযোগিরা খাবার খান, ঘুমান এবং শৌচকার্য সম্পন্ন করেন। সেখানে বার বার মনে করিয়ে দেয়া হয় নিজেকে পরিষ্কার করার কথা, কারণ এমন পরিশ্রমে মস্তিষ্কও ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা অনেক সময়। এরপর আবার শুরু দৌড়। একটু দেরি হলে অর্থাৎ ঘন্টায় ৪.১৬৬ মাইল বেগে দৌড়াতে না পারলে অনেকের এই ১৫ মিনিট সময় নেমে আসে সেকেন্ডে।
এই রেসের অন্যতম আকর্ষণ ব্যতিক্রমী চিয়ার লিডার্স। তারা প্রতিযোগীদের ছিটকে যাবার জন্য প্ররোচিত করতে থাকে। এমনকি উৎসাহর বদলে আস্তে দৌড়ানোর জন্য দুয়োধ্বনি দেয়া হয়। ক্যান্ট্রেল এই আয়োজনকে দেহের সাথে মনের শক্তির লড়াই হিসেবে অভিহিত করেছেন। একইসাথে একজন প্রতিযোগী নিজের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন ক্ষমতায় চলার মুখোমুখি হন, চিনতে পারেন নিজেকে। ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া এই ব্যতিক্রমী রেস তাই সুইডেনের অন্যতম আকর্ষণ।