চলতি বছরেই টোকিও অলিম্পিক আয়োজন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন আয়োজক কমিটির সভাপতি সেইকো হাশিমোতো। তবে আগামী ২৩ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া এই গেমসে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে দাবদাহ দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের প্রফেসর মাইক টিপটন। তার এমন মন্তব্যকে সমর্থন দিয়েছেন লিডস ইউনিভার্সিটির প্রিস্টলি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেটের গবেষকবৃন্দ, ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সাসটেইনাবলিটি ইন স্পোর্টস (বেসিস) এবং খেলোয়াড়রা।
গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯০০ সালের পর থেকে জাপানের তাপমাত্রা ২.৮৬ ডিগ্রি বেড়েছে, যা বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির তিন গুণ! ২০১৮ সালের তাপদাহ জাপানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষিত হয় এবং ২০১৯ সালে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ হাজার জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে ব্রিটিশ অ্যাথলেট অ্যালিস্টার ব্রাউনলির, ২০১০ সালের লন্ডন অলিম্পিকে তিনি ফিনিশিং লাইনের ৩০০ মিটার আগে জ্ঞান হারান এবং নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করেন। এমনকি ২০১৯ সালের ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল কাতারের দোহায়, যেখানে ৬৮ জন নারী অ্যাথলেট ম্যারাথনে অংশ নিলেও ২৮ জনকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছিল তাপদাহের কারণে। এমন অবস্থায় অ্যাথলেটদের খাপছাড়া পারফরম্যান্সই আশা করা যায়।
টিপটন বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “অলিম্পিক আয়োজনকে বছরের অন্য সময় সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কমিটির ভাবা উচিত। আমি অনেকটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, অধিকাংশ গেমসে খাপছাড়া পারফরম্যান্স দেখা যাবে।” এর বড় প্রমাণ অবশ্য ম্যারাথন, টোকিও থেকে প্রতিযোগিতাটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে তাপদাহের আশঙ্কায়। স্যাপোরোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যারাথন দৌড়ের ট্র্যাক ঠান্ডা রাখার জন্য কৃত্রিম উপায় হিসেবে তাপ প্রতিফলিত হয় এমন আবরক দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে এমন পরিকল্পনাও আছে।
তাই টোকিও অলিম্পিক সবচেয়ে ‘উষ্ণ’ অলিম্পিক হিসেবে নাম লেখাতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ না থাকলেও আপাতত আয়োজন যথাসম্ভব নিরপেক্ষ এবং সুবিধাজনক করতে প্রস্তুত জাপান কর্তৃপক্ষ।